মো. নাসির উদ্দিন, বরিশাল (উত্তর) প্রতিনিধি: বরিশালের উজিরপুরে কোটি টাকায় নির্মিত কালভার্টে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো পার হয়ে। ২ বছড় আগে কালেভার্টের নির্মান কাজ শুরু হলেও দুপাশে সংযোগ সড়ক না করায় ভোগান্তিতে স্থানীয়রা। উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নের উত্তর বড়াকোঠা গ্রামের ধামুরা-ডাবেরকুল রাস্তার খালের উপর এলজিইডির অর্থায়নে ২০২১-২২ অর্থবছড়ে এ কালভার্টটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। অপরিকল্পিত এমন নির্মাণের কারনে ২ বছরেও লাঘব হয়নি স্থানীয়দের দুর্ভোগ। তাদের ভরসা তাই এখন বাঁশের সাঁকো।
এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে পল্লী উন্নয়ন অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় ৮০০ মিটার রাস্তা ও একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য ৯০ লাখ ২৮ হাজার ৪৮৭ টাকা ব্যয়ে কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মৌ এন্টারপ্রাইজ। ১ বছরের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কেটে গেছে ২ বছর, শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় কালভার্টটি জনস্বার্থে কোন কাজেই আসছে না।
২১ অক্টোবর শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধা মৃত্য হাকিম ডাক্তারের বাড়ির সামনে ২৫-৩০ ফুট প্রসস্থ খালের উপর কালভার্টের মূল কাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু কালভার্টটিতে নেই কোনো সংযোগ সড়ক। ফলে পার হতে পারছে না কোনও যানবাহন। বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে কোনমতে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। কালভার্ট নির্মাণের ফলে স্থানীয়দের উপকারের পরিবর্তে উল্টো দুর্ভোগ বেড়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিন ১ হাজার মানুষ এ সড়তেযাতায়ত করে। উওর বড়াকোঠা গ্রামের লোকজন ধামুরা বাজার ও উপজেলায় সদরের সাথে স্বল্প সময়ে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম এই সড়কটি। কিন্তু কালভার্টটির বেহাল দশার কারণে এটি এখন স্থানীয়দের গলার কাটা।
উওর বড়াকোঠা গ্রামের বাসিন্দা আজিজ সরদার (৫৫) বলেন, সংযোগ সড়ক না থাকায় কালভার্টটি চলাচলের ক্ষেত্রে কোনো কাজেই আসেনি। এখানে ৮০০ মিটার রাস্তা কার্পেটিং করার কথা ছিলো। সড়কসহ কালভার্টটির মেরামতের কাজ করা হলে খুব সহজে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারবে স্থানীয়রা।
উওর বড়াকোঠা গ্রামের আ. রহমান সিদ্দিকি (৪৫) বলেন, কালভার্টটির উত্তর পাশে অনেকের ফসলি জমি রয়েছে। উভয় পাড়ের লোকজনকে প্রতিদিন কৃষি কাজের জন্য আশা-জাওয়া করতে হয়। সংযোগ সড়ক ও কালভার্টটি মেরামত করা হলে চলাচলের ঝামেলা কমতো।
অভিযোগ বিষয়ে ঠিকাদার মেসার্স মৌ এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি তন্ময়ের মুঠোফোনে কল করা হলেও সেটি বন্ধ দেখাচ্ছে। তবে ঠিকাদারের তদারককারী মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রকল্প এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন ও বৃষ্টির সমস্যার কারণে কাজে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আমরা এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করবো।
বড়াকোঠা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, কালভার্ট ও রাস্তার নির্মাণ না হওয়ায় জনগণের খুবই সমস্যা হচ্ছে। ঠিকাদারকে প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে বার বার তাগিদ দেয়া হচ্ছে কিন্তু তারপরেও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।
এ প্রসঙ্গে উজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী সুব্রত রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available