বরিশাল ব্যুরো: উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ ক্রমশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ায় বরিশাল থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যাবস্থাপনা বিভাগ বরিশালের সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও চাঁদপুর জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ সমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। তবে বরিশাল নদী বন্দরে ২ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের নদী বন্দরে এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে। ভোলার উদ্দেশ্যে নদী বন্দরে আসা যাত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, মেয়ে বাড়ি বেড়াতে এসেছিলাম। এখন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে নদী বন্দরে এসে দেখি সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আবার মেয়ের বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
আরেক যাত্রী রবিন বলেন, জরুরী কাজের জন্য মেহেন্দিগঞ্জের ভাষানচরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নদী বন্দরে এসেছিলাম। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি কোন লঞ্চ যাবে না। এখন বাধ্য হয়ে সড়ক পথে যেতে হবে।
আরেক মেডিকেল কলেজের ছাত্র সাব্বির বলেন, বাড়ি যাওয়ার জন্য সহজে ছুটি মিলে না। অনেক কষ্ট করে আজ ছুটি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিলাম। কিন্তু লঞ্চ ঘাটে এসে দেখি ঘূর্ণিঝড় হামুনের কারণে সব লঞ্চ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা অনেকটা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।
নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যাবস্থাপনা বিভাগ বরিশালের সহকারী পরিচালক রিয়াদ হোসেন বলেন, সকাল ১০ টা থেকে অভ্যন্তরীণ ও ঢাকা-বরিশাল রুটের সকল লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিটি স্থানে মাইকিংয়ের মাধ্যমে মাছ ধরার নৌকা, যাত্রীবাহী ট্রলারসহ সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। লঞ্চগুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নোঙর করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে ঘুর্নিঝড় হামুন মোকাবেলায় সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ দেয়ার আগ পর্যন্ত সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলে লঞ্চগুলো চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবেলায় বরিশাল জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ১১ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বরিশাল জেলার সকল সরকারি দফতরের কর্মকর্তা, এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, বরিশাল জেলায় ৫৪১ টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুতির পাশাপাশি ৬১ টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় তাৎক্ষণিক ৩২২ মেট্রিক টন চাল মজুদ রাখা হয়েছে, অসহায় দুর্গতদের তাৎক্ষণিক খাদ্য সরবরাহের জন্য ৭৭০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৯ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের মজুদ রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available