কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিঙ্গি নৌকায় খাল পারাপার হতে হয় নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ১৪ নং মোজাফফর পুর ইউনিয়নের ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের ৫ গ্রামের অন্তত ৫ হাজার মানুষকে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এমনকি হাসপাতালে রোগী নিতেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাই খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোজাফফরপুর ইউনিয়নের ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে রাজি খাল। যাতায়াতের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এই খাল পার হয়ে যেতে হয় উপজেলা সদর, ইউনিয়ন পরিষদ, পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রতি বছরই বর্ষায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে সবার চলাচল করতে হয়। কিছু দিন আগে ভারী বর্ষণে সাঁকোটি ভেঙ্গে যায়। তাই পারাপারে জন্য এ খালে একটি ডিঙ্গি নৌকার ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয়রা। খাল পার হতে প্রতিবার ৫ টাকা দিতে হয় মাঝিকে।
বর্তমানে এ নৌকায় প্রতিদিন খাল পারাপার হচ্ছেন ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬টি মাদরাসা ও একটি কলেজের শিক্ষার্থীসহ ৬ গ্রামের অন্তত ৫ হাজার মানুষ। আর এ খাল পার হতে গিয়ে প্রায়ই ছোট বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কৃষকরা। এছাড়া গর্ভবতী মা কিংবা অসুস্থ রোগীদের নিয়ে খাল পারাপারে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। তাই এই খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
হারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাজী লিটন জানান, আমরা বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে গেছি। সবাই বলে ব্রিজ নির্মাণ করে দেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা অবহেলিতই রয়ে গেলাম। আমাদের এলাকার মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে আমরা বড় ভোগান্তি পোহাচ্ছি। এছাড়া অসুস্থ রোগীদের নৌকায় করে হাসপাতালে নেওয়া অনেক কষ্ট। তাই এই খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
চৌকিদরা গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী লিমন মিয়া জানান, আমি এই খাল পার হয়ে স্কুলে যাই। অনেক সময় ভয় করে। কয়েকদিন আগেও খালে এক শিক্ষার্থী পড়ে গিয়েছিল। বৃষ্টির সময় খালে স্রোত থাকে তখন আরও বেশি ভয় লাগে। ব্রিজ হলে আমাদের অনেক উপকার হবে।
চৌকিদরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) বাবুল জানান, এই রাজি খাল (এক সময় নদী ছিল) পার হয়ে প্রতিদিন শিক্ষক শিক্ষার্থী, কৃষক, জেলেসহ শতশত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। তাই এই খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ খুবই জরুরি।
মোজাফফর পুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির আলম ভূঞা জানান, আমি এবার নতুন চেয়ারম্যান হয়েছি। আমার আগে যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি এলাকার মানুষের দুর্ভোগের জন্য কোনো চিন্তা করেন নাই। স্থানীয় এমপি অসীম কুমার উকিল যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ডিও লেটার দিয়েছেন।আমিও এলজিইডি অফিসের সাথে বার বার কথা বলেছি। আশা করছি, দ্রুতই একটি ব্রিজ নির্মাণ হবে।
কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হোসেন জানান, রাজি খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এমপি মহোদয়ের ডিও লেটারসহ আমরা একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রস্তাবটি পাস হলে ব্রিজ নির্মাণ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available