বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর বদলগাছীতে বিয়ের দাবিতে মুসলিম যুবকের বাড়িতে অনশন করছেন ২৫ বছরের এক হিন্দু তরুণী। ওই তরুণীর বাড়িতে আসার খবর পেয়ে বাড়ির দরজায় তালা দিয়ে উধাও প্রেমিক আব্দুল মুমিন(৩৩)। ঘটনাটি ঘটেছে বদলগাছী উপজেলার ৫নং কোলা ইউপির ভোলার পালশা গ্রামে।
অনশনরত তরুণীর বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানায় এবং অভিযুক্ত প্রেমিক বদলগাছীর ৫নং কোলা ইউপির ভোলার পালশা গ্রামের মৃত আজির উদ্দিনের ছেলে।
২৫ অক্টোবর বুধবার দুপুর ১২টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মুমিনের বাড়িতে তালা। বাড়ির দরজায় ভুক্তভোগী তরুণী দাঁড়িয়ে আছেন। বিয়ের দাবিতে একজন ভিন্ন ধর্মালম্বী মেয়ের অনশনের কথা শুনে আশেপাশের গ্রামের নারী-পুরুষ ভিড় করেন।
অনশনরত তরুণী জানান, ‘৩ বছর পূর্বে ঢাকায় চাকরির সুবাদে আব্দুল মুমিনের সাথে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে আব্দুল মুমিন প্রেম এবং বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিয়ের প্রলোভনে প্রায় ৩ বছর এক সাথে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করি। আমাদের এই সম্পর্কের বিষয়ে মুমিনের পরিবারের সকলে জানে। গত ২০ দিন থেকে কোনো যোগাযোগ না থাকায় ২৫ অক্টোবর বুধবার সকালে মুমিনের বাড়িতে আসি। আসার আগেই মুমিন বাড়ির দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। ইতি পূর্বে মুমিনের বাড়িতেও দুইবার এসেছি। প্রতি বারে ৩ দিন করে বাড়িতে অবস্থান করেছি। কিন্তু বাড়ির বাইরে বের হতে দেয়নি। পিছনে গোয়াল ঘরের দরজা দিয়ে অন্ধকারে যাতায়াত করাতো।’
তিনি আরও জানান, ‘তিন বছর ধরে সমস্ত বেতন উত্তোলন করে মুমিনকে দিয়েছি। এখন বিয়ের কথা বললে মুমিন বলে, ৫ লাখ নয়তো ২ লাখ টাকা নিয়ে আসো বিয়ে করবো। আমি এখন এতো টাকা কোথায় পাবো। আমাকে যদি বিবাহ না করে, আমার মরা ছাড়া কোনো পথ খোলা থাকবে না।’
স্থানীয়রা বলেন, সকালে এই মেয়ে আসার সংবাদ পেয়ে মুমিন আত্মগোপন করে। মুমিনের সাথে মুমিনের মা দরজায় তালা দিয়ে চলে গেছে। দীর্ঘ সময় পার হলেও মুমিনের পরিবারের কেউ আসেনি। এক প্রতিবেশী অনশনরত তরুণীকে খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। স্থানীয়রা আরও জানান, একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে বিয়ের জন্য এসেছে। আমরা চাই মুমিন এসে এই মেয়েকে বিবাহ করুক।
এ বিষয়ে আব্দুল মুমিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যপারে কোলা ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর ইসলাম স্বপন বলেন, সকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক তরুণী আমাকে মুমিনের সাথে সম্পর্কের বিষয়টি জানায়। আমি মুমিন এবং তার পরিবারকে বিষয়টি সমাধানের জন্য খবর পাঠালে মুমিন ও তার পরিবারের কেউ আসেনি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী তরুণী পরিষদ থেকে চলে যায়।
এ ব্যাপারে বদলগাছী থানা অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available