নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মহাখালীর খাজা টাওয়ারে ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না। ভবনটিতে দাহ্য পদার্থ বেশি ছিল সে কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায় বলে জানিয়েছেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন।
২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, এখনো আগুনের ফ্লেম আছে যার জন্য আগুন জ্বলছে। কারণ, এই ভবনে ব্যাটারি আছে, স্টোরস, ক্যাবেল, সুইচস, আইসোলেসন ফোম এবং ১২ ও ১৩ তলাতে ইন্টেরিয়র দিয়ে খুবই সুসজ্জিত করা, যা অত্যধিক দাহ্য উপাদান।
কয়তলা থেকে আগুন লেগেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগুন লাগার দুটি মত আছে। কেউ বলছেন চারতলা থেকে ৯, ১০ ও ১১ তলায় দ্রুত ছড়িয়েছে। আবার কেউ বলছেন, ১১তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে যখন আমরা তদন্ত শেষ করবো তখন বলা যাবে, কোথা থেকে এবং কী কারণে আগুনের সূত্রপাত। আপাতত মনে হচ্ছে, কোনো বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হয়তো আগুন লেগেছে।
তিনি আরও বলেন, এ এলাকায় একটি ফায়ার সার্ভিসের টহল গাড়ি ছিল। প্রথম গাড়ি হিসেবে টহল গাড়িটি অগ্নিনির্বাপণ কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে একে একে ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে কাজ করে। ফায়ার সার্ভিসের অত্যাধুনিক তিনটি সর্বোচ্চ টিটিএল ব্যবহার করা হয়েছে। প্রায় দেড় শতাধিক ফায়ার ফাইটার এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কাজ করে। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসারসহ সবাই কাজ করেছে।
বৃহস্পতিবার ৫টা ৭ মিনিট থেকে যখন আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হয় তখন আগুন বাইরে তেমন একটা ছিল না। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আগুন কন্ট্রোলে চলে আসে। কিন্তু অনেক সময় নেওয়া লাগে একজন মানুষকে উদ্ধার করার জন্য। কারণ, ১৩ তলায় যে অফিস ছিল সেটি কম্পার্টমেন্ট ছিল। যার কারণে আগুন নেভানোর পরেও কিছুক্ষণ পর আবার আগুন দাও দাও করে জ্বলে উঠে। এ পর্যন্ত আমরা ৯ জনকে উদ্ধার করেছি। দুজন লাফিয়ে পড়েছিল তাদের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে শেষ মুহূর্তে আমরা একজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেছি।
রাজধানীর মহাখালীর বহুতল ভবন খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন হাসনা হেনা (২৭), মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (৬৩) ও আকলিমা রহমান (৩১)। হাসনা হেনা ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রেস অনলাইন লিমিটেডের সেলস ইনচার্জ ছিলেন। রফিকুল ইসলাম পেশায় প্রকৌশলী। তিনি সাইফ পাওয়ারটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ছিল খাজা টাওয়ারের ১৩তলায়। আর আকলিমা ভবনটির নবম তলায় একটি কল সেন্টারে কাজ করতেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে মহাখালীর আমতলী এলাকার ১৪ তলা ওই ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। উদ্ধারকাজে যোগ দেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available