সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এক স্কুল শিক্ষক ছেলে হারিয়ে মামলা করে এখন বাড়িভিটা হারানোর আতঙ্কে আছেন। সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় ‘স্বপ্ন বিলাস’ সমিতির লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে এখন নিজেই বিপাকে ওই শিক্ষক। আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে মামলা তুলে নিতে দিচ্ছেন ধমকি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই ফের শুরু করেছে ভবন নির্মাণ কাজ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার ও রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করলেও বন্ধ হচ্ছে না আসামিদের বেপরোয়া তৎপরতা।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় ‘স্বপ্ন বিলাস’ সমিতির নির্মাণাধিন ভবনের ৮তলা থেকে গত ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে রডহীন ইটের তৈরি পিলার ধসে পড়ে মো. শরিফুল ইসলামের টিনশেড বাড়ির চালে। পিলারটি চাল ভেদ করে ঘরের ভেতরে থাকা শিশু আবদুল্লার মাথায় পড়লে সে মারা যায়। ঘটনাটি খুন বলে গণ্য না হলেও দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ঘটনায় নিহত শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ৩০৪ ধারায় ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় পাইনাদী রেকমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলীসহ আলমগীর হোসেন, কামাল হোসেন, আবুল বাশার, সুলতান মিয়া, ঠিকাদার আহম্মদ আলী ও তার ছেলে জিয়াকে আসামি করা হয়। অন্যদিকে ভবন মালিক মজিবুর রহমান, জুয়েল উর রহমান, বাহাউদ্দিন মিয়া, সামছুল হক, ইয়াসমিন, ফারুক আহমদ ভূঁইয়া, মোশারফ হোসেন, আব্দুল আউয়াল, মোজাহারুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, আব্দুল বারেক, জাকির হোসেন, শিউলি আক্তার, হোসাইন শহীদ মোহাম্মদ শীশ, আমিনা খাতুন ও তালেব মিয়া ঘটনার পর থেকেই তারা গা ঢাকা দিয়েছেন।
মামলার বাদী শরিফুল ইসলামের অভিযোগ, আসামিরা তার বাড়িভিটা কিনে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন হুমকিও দিয়েছে। তাই বাদীর ধারণা, আসামিদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা না রেখে ভবন নির্মাণ কাজ করছে। ঘরের চালে পিলার পড়া ও সন্তানের মৃত্যু, বাড়ি দখলের ঘৃণ্য পরিকল্পনারই একটি অংশ বলে মনে করছেন তিনি।
এদিকে, ভবনের আট তলা থেকে পিলার ধসে শিশু আব্দুল্লার মৃত্যু হওয়ার পর থেকে ওই ভবনটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। ইমারত নীতিমালার তোয়াক্কা না করেই ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ভবন নির্মাণে ইমারত নীতি মামলা মানা হচ্ছে কিনা তা তদন্ত করার দাবি জানিয়ে শরিফুল ইসলাম রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে রাজউক থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ভবন নির্মাণকারী স্বপ্ন বিলাস সমিতির সভাপতি ও মিজমিজি পাইনাদী রেকমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলীর কাছে জানতে চাইলে, তিনি শরিফুল ইসলামের বাড়িভিটা দখলের চেষ্টা ও হুমকি ধমকির অভিযোগ অস্বীকার করেন। শিশু সন্তান আবদুল্লাহ মৃত্যুর ঘটনাটিকে তিনি দুর্ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available