খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার পাইকপাড়া মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন। তিনি পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রী। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবা নিরুদ্দেশ হন। জমিজমা না থাকায় লেখাপড়া পাঠ চুকিয়ে সংসারের হাল ধরেন তিনি। অর্থাভাবে নিজের শিক্ষা জীবন থেমে গেলেও থামেনি জ্ঞানের প্রতি স্পৃহা ও ভালোবাসা। এখন তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬ জন। মা-স্ত্রী আর দুই কন্যা ছাড়াও রয়েছে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ভাই।
ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ায় আগ্রহ ছিলো জসিমের। অর্থের অভাবে বই কেনার সামর্থ্য না থাকায় পাসের জানিপুর বাজারে গিয়ে পত্রিকা পড়তেন। কাঠমিস্ত্রীর কাজ করে অর্জিত আয় দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি জসিম ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন ছোট একটা পাঠাগার। ১০০ বই দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও ধীরে ধীরে বইয়ের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজারের বেশি। এই পাঠাগারে সদস্য এখন ৫৬৪ জন। সদস্য হতে ও বই পড়তে কোনো পয়সা দিতে হয় না।
স্বল্প আয়ের সংসারে সাহস জোগান তার স্ত্রী। স্বামী কাঠমিস্ত্রীর কাজে বেড়িয়ে গেলে লাইব্রেরীর নানা কাজসহ পাঠকদের সেবা দিয়ে থাকেন বলে জানান জসিমের স্ত্রী পপি খাতুন। লাইব্রেরিতে নতুন নতুন বই কিনতে ও সংসার চালাতে হিমিশিম খেলেও স্বামীর এই মহতি উদ্যোগে খুশি তিনি।
স্কুল শিক্ষক ইতি খাতুন জানান, জসিমের ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা এই গ্রন্থাগারের জনপ্রিয়তা দিনদিন বেড়েই চলেছে।
ছোট একটি ঘরে গড়ে ওঠা এই পাঠাগারে এক সঙ্গে বেশি পাঠক বসতে পারেন না। সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানরা এগিয়ে এলে পাঠাগারটি আরও বড় করার ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান জসিম উদ্দিন।
শিক্ষানুরাগী জসিম উদ্দিনের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিপন বিশ্বাস।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available