মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: আনারসের রাজধানী মধুপুর গড়। লাল মাটির এ গড়ে রয়েছে আনারস-কলাসহ নানা ফল-ফসলের বাগান। এছাড়াও বনের পুরো এলাকা জুড়ে রয়েছে প্রচুর আগাছা জাতীয় ঘাস। এসব ঘাসেরও কদর আছে, বিক্রি হয় হাটেবাজারে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় জগত বেড় নামের ঘাস বা আগাছা। শটি গাছের পাতা, বড় বড় আগাছার চাহিদা বেশি। এ অঞ্চলে এসব আগাছা প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় বলে আগাছা বিক্রিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন অনেকেই। আগাছা সংগ্রহ করতে কোনো খরচ নেই বিধায় মধুপুর গড় এলাকার অনেকেই আগাছা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
জলছত্র মোটের বাজারে গিয়ে জানা যায়, আগাছা ক্রয়-বিক্রয়ের নানা কথা। আনারসের জন্য বিখ্যাত মধুপুর গড়। এক সময় দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাকে করে আনারস পাঠানোর সময় নষ্টের হাত থেকে রক্ষার জন্য খড় দেয়া হতো। এখন খড়ের দাম বেশি, চাহিদা মতো পাওয়াও যায় না। তাছাড়া, খড়ের আনারস তেমন সতেজ থাকে না। তাই শটি পাতা ও আগাছা ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন আনারস ব্যবসায়ীরা। ধীরে ধীরে বাড়ছে আগাছার চাহিদা। এখন আর খড় দিয়ে আনারস সাজাতে দেখা যায় না। অন্যদিকে ভ্যানওয়ালা কিছু উদ্যমী পরিশ্রমী লোক সকাল থেকে সারাদিন নানা ঝোঁপ ঝাড় বন ও আনারস কলার বাগানের আশপাশ থেকে এসব আগাছা কেটে এনে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ীরা খড়ের পরিবর্তে এসব ঘাস-আগাছা কিনে আনারস মুড়িয়ে ট্রাকে করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে থাকেন।
কেউ অর্ডার না দিলেও এসব আগাছা বিক্রেতারা বাজারে নিয়ে আসে। যার যার প্রয়োজন মতো কিনে নেন। একজন আগাছা বিক্রেতা দিনে তিন চার ভ্যান আগাছা তোলে এনে বিক্রি করেন। প্রতি ভ্যান আগাছা তিনশ' থেকে চারশ' টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। সারা বছর বিক্রি হলেও জৈষ্ঠ্যমাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত বেশি চাহিদা থাকে। কারণ, ঐ সময় বাজারে আনারসের মৌসুম চলে।
আগাছা বিক্রেতা হেকমত আলী জানান, তিনি জ্যৈষ্ঠমাসে থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত আগাছা বিক্রি করেন। প্রতি ভ্যান ৩ শ' থেকে সাড়ে চারশ' টাকা দরে বিক্রি করেন। এ কাজে তার সন্তানও সহযোগিতা করে। আগাছা বিক্রি করে উপার্জিত টাকায় এই কয়েক মাস চলে তার সংসার। আনারস মৌসুমের সময় তিনি দিনে হাজার-বারোশ' টাকা উপার্জন করতে পারেন বলে জানান।
আনারস ব্যবসায়ী হাবিজুর ইসলাম জানান, জগত বেড় আগাছা দিয়ে আনারস ট্রাকে লোড দিয়ে মোকামে পাঠালে সহজে নষ্ট হয় না। সতেজ থাকে আনারস। এ জন্য জলছত্র বাজারের সব পাইকার আগাছা দিয়ে আনারস ট্রাকে লোড দিয়ে থাকে। খড়ের চেয়ে আগাছা অনেকটা ভালো বলে তিনি জানান।
কুষ্টিয়ার আড়ৎদার শাজাহান আলী জানান, খড় দিয়ে আনারস পাঠানোর চেয়ে আগাছা দিয়ে পাঠানো অনেক ভালো। ঘাস দিয়ে আনারস পাঠালে কম ক্ষতি হয়, আনারস ভালো থাকে। ভালো দামে বিক্রি করা যায় । দেখতে ভালো থাকে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available