স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুরে প্রতিবন্ধী নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার মূল আসামিদের তিন মাসেও গ্রেফতার করতে পারেনি জয়দেবপুর থানা পুলিশ। উল্টো মামলার প্রধান সাক্ষী মিলনকে গ্রেফতার করার অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী।
১৭ নভেম্বর শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়দেবপুর থানার ওসি মাহাতাব উদ্দিন।
মামলার প্রধান সাক্ষী মিলনের স্ত্রী নুরনাহার জানান, এ মামলাটির সাক্ষী হওয়ার পর থেকেই তার স্বামীকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতিসহ হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল আসামিপক্ষের লোকজন। এসব বিষয় স্থানীয় এবং প্রশাসনের লোকজনকে জানালেও তারা কেউ সহযোগিতা করেননি।
নুরনাহার আরও জানান, ‘গত দুই দিন ধরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফোন দিয়ে আমার স্বামীকে দেখা করতে বলেন। পরে শুক্রবার সকালে থানায় দেখা করতে গেলে তাকে গ্রেফতার করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ।’
এ ঘটনায় স্বাক্ষীর স্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার স্বামী এক নারীকে বাঁচাতে গিয়ে আজ নিজেই হয়রানির শিকার হচ্ছে। আসামিদের কথায় এই মামলায় আমার স্বামীকে আসামি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি এমনভাবে মামলার সাক্ষীকে হয়রানি করা হয় তাহলে ভিকটিম ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হতে পারে। তাই প্রশাসনের কাছে আমার দাবি, মূল আসামিদের গ্রেফতার করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচার আওতায় আনা হোক এবং মামলার সাক্ষী আমার স্বামী ও আমার পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক।’
গণধর্ষণের শিকার ওই নারী জানান, ‘যারা মামলার মূল আসামি তাদের গ্রেফতার না করে উল্টো যিনি আমাকে বাঁচিয়েছেন তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ কেন তিন মাসেও মূল আসামিদের গ্রেফতার করতে পারলো না আমার জানা নেই। তবে মামলা সাক্ষীদের হয়রানি করার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরীফ আহমেদ জানান, ‘গণধর্ষণ মামলায় আসামীরা আদালতের স্বীকারোক্তিতে মামলার স্বাক্ষী মিলনকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত বলে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিদের জবানবন্দি ও ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট থাকায় উক্ত ধর্ষণ মামলার স্বাক্ষী মিলনকে আসামি করা হয়েছে। তাই তাকে এ মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দিন জানান, ‘গত ২৫ আগস্ট গাজীপুর সদর উপজেলায় এক প্রতিবন্ধী নারী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আসামিদের আদালতে পাঠালে আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়ার সময় মামলার প্রধান সাক্ষী মিলন তাদের সহযোগিতা করেন বলে স্বীকারোক্তি দেয়। পরে এ মামলায় স্বাক্ষী মিলন জড়িত থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।’
উল্লেখ্য, সদর উপজেলার মনিপুরে গজারি বনে বন্ধুকে গাছে বেঁধে রেখে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক নারী পোশাক শ্রমিক (২৪) গণধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। মামলার পর পরই পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে। তবে মামলার মূল আসামি গাজীপুর সদর উপজেলা মহিলা নেত্রীর ছেলেসহ দুজনকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available