স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকার আশুলিয়ায় পরকীয়ার জেরে স্বামী দরুল হুদাকে (৪২) হত্যার দায়ে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা স্ত্রী খাতিজা খাতুনকে (২৮) গ্রেফতার করেছে র্যাব। ২২ নভেম্বর বুধবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।
এর আগে ২১ নভেম্বর সোমবার রাতে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নিহত দরুল হুদা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার উত্তর ফতেহপুর গ্রামের মৃত জহাব আলীর ছেলে। তিনি একটি কীটনাশক কারখানার প্যাকিংম্যান হিসেবে কাজ করতেন।
র্যাব জানায়, গত ২০ নভেম্বর আশুলিয়ার পলাশবাড়ি বাতানটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে দরুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। একই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে নিহতের স্ত্রী খাতিজা পোশাক কারখানা থেকে বাসায় ফিরে নিজের স্বামীর মরদেহ দেখতে পেলে তার আর্তনাদে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। পরে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে দুরুলের হাত-পা বাঁধা এবং মুখে স্কচটেপ দিয়ে আটকানো অবস্থায় ঘরের মেঝেতে নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
এ ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডটি বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। পরবর্তীতে ঘটনার বিষয়ে থানা পুলিশের পাশাপাশি র্যাবকে অবহিত করলে র্যাব-৪-এর একটি অভিযানিক দল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেইসাথে হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে ছায়াতদন্ত শুরু করে।
গ্রেফতার আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব আরও জানায়, নিহত দরুল হুদার স্ত্রী খাতিজা ২০১১ সালে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিলো। প্রায় সময় তাদের পরিবারে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ও আর্থিক অসঙ্গতি নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হতো। এক পর্যায়ে খাতিজা তার পরকীয়া প্রেমিকের সাথে স্বামী দরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার কয়েকদিন আগে আসামি তাদের সন্তানদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। অতঃপর গত ১৯ নভেম্বর রাতের খাবার শেষে ভুক্তভোগী দরুলকে তার নিয়মিত ঔষধের পাশাপাশি সুকৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। ঘুমের ওষুধের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় দুরুল অচেতন হয়ে পড়লে আসামি ও তার প্রেমিক নিহতের হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে মুখ স্কচটেপ দিয়ে পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং নিহতের মুখমণ্ডল ও মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মেঝেতে ফেলে রাখে।
পরবর্তীতে নিহতের স্ত্রীকে কেউ যেন সন্দেহ না করে, সেজন্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২০ নভেম্বর সকালে খাতিজা প্রতিদিনের ন্যায় তার কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায় এবং অফিস থেকে অসুস্থতার কথা বলে দুপুরে ঘরে ফিরে আসে। পরে ঘরের মেঝেতে তার স্বামী দরুলের মরদেহ পরে আছে বলে ডাক চিৎকার শুরু করে।
এ বিষয়ে র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, গ্রেফতার খাতিজার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available