পাবিপ্রবি প্রতিনিধি: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ নভেম্বর ২১টি বিভাগকে নিয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানান অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা। ২৫ নভেম্বর শনিবার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং ইতিহাস বিভাগের সেমিফাইনাল খেলায় রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়ায় খেলা বন্ধ করে দিলে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ আরও তীব্র হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, ১ম রাউন্ডে ১১টি দলকে লটারি করে ২য় রাউন্ডে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি ১০টি বিভাগকে ম্যাচ খেলে ২য় রাউন্ডে উঠতে হয়েছে। কয়েকটি বিভাগ খেলে ২য় রাউন্ডে উঠছে, আর কয়েকটি বিভাগ না খেলেই উঠছে, এ বিষয়টি অনেক বিভাগের শিক্ষার্থীরাই মেনে নিতে পারেননি। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নানান কথা বললেও তা আমলে না নিয়েই টুর্নামেন্ট শুরু করা হয়। টুর্নামেন্ট শুরু দিনও নানা অব্যবস্থাপনা চোখে পড়ে। সকাল ১০টায় খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সে খেলা শুরু হয় দুপুর ১টায়। পরবর্তী খেলাগুলোতেও খেলার সিডিউল বিপর্যয় হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ খেলার দায়িত্বে যারা থাকেন তারা সব সময় মাঠে থাকেন না। খেলা শুরু করে দিয়ে রেফারির কাছে খেলার দায়িত্ব দিয়ে তারা মাঠ থেকে চলে যান। এ সময় মাঠে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে তা দেখার কেউ থাকে না। এমনকি কোনো শিক্ষার্থী খেলায় আহত হলে তার চিকিৎসার খরচও প্রশাসন থেকে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং ইতিহাস বিভাগের সেমিফাইনাল খেলায় রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এক পর্যায়ে এ উত্তেজনা দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মাঠে এলেও তিনি সেটির সমাধান করতে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে তিনি ক্ষোভ নিয়ে মাঠ ছাড়েন। পরে আয়োজক কমিটি খেলাটি সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করে দেন। এর আগে ইইই বিভাগের একটি খেলায় খেলোয়াড়দের মধ্যে কথাকাটি হয়। এক পর্যায়ে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবুর মধ্যস্থতায় খেলা আবার শুরু হয়।
এ বিষয়ে পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, টুর্নামেন্টের শুরু থেকে নানা অব্যবস্থাপনা ছিল। আমরা এ নিয়ে অভিযোগ করলেও সেটি প্রশাসন শোনেনি। যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা মাঠে আসেন না। খেলাধূলা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে। কিন্তু এখানে খেলাধূলা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরোধ তৈরি করছে। ব্যবস্থাপনা কমিটি ঠিক থাকলে এগুলো হতো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খেলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ড. রাহিদুল ইসলাম রাহি বলেন, কিছু ভুল বুঝাবুঝি থেকে আজকের খেলায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। এটা অপ্রত্যাশিত। এটা সমাধানের জন্য কাজ চলছে। আশা করি, সামনে সমস্যাগুলো আর তৈরি হবে না।
আয়োজকদের খেলার মাঠে না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, এ অভিযোগটি সত্য নয়। শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষা থাকার কারণে সবাই এক সাথে মাঠে থাকতে পারেন না। কিন্তু কেউ না কেউ মাঠে থাকেই।
টুর্নামেন্টের আইনশৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন, খেলার মধ্যে কিছু সমস্যা সব সময় তৈরি হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকেই খেলা নিয়ে অতিরিক্ত উত্তেজিত হয় পড়েন, এটা অস্বাভাবিক। আমরা চাই না খেলা নিয়ে কারো সাথে কারো বিরোধ তৈরি হোক। আমরা চেষ্টা করি, সব পক্ষকে শান্ত রাখার। আশা করি, সবাই সামনের ম্যাচগুলোতে শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available