খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: দু’পায়ে নেই চলাচলের শক্তি। তারপরও সংসারের ভার কাঁধে তুলে নিয়ে প্রতিনিয়ত জীব যুদ্ধ করে চলেছেন পঙ্গুত্বের কাছে হার না মানা কুষ্টিয়ার খোকসা এলাকার অমরেশ অধিকারী। শয্যাশায়ী মা, স্ত্রী আর ২ সন্তানের পরিবারে একমাত্র অবলম্বন তিনি। হাটে-ঘাটে ও ধর্মীয় উৎসবে বাদাম-চানাচুর বিক্রি করে তাদের পরিবারের ৫ সদস্যের মুখে খাবার যোগান দেন। উপার্জন না হলে দিন যায় অনাহার-অর্ধাহারে। এত অভাব অনটনের মধ্যেও ভিক্ষা না করে পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
আলাপচারিতায় অমরেশ জানান, ২ বছর বয়সে তার জ্বর হয়। এরপর অভাব-অনটনের সংসারে চলে গ্রাম্য চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা। শুরুতে শরীরের নিচের অংশ, পরে ২ পাই পুরোপুরি অকেজো হয়ে যায় তার। সে থেকে বরণ করে নেন পঙ্গুত্বের জীবন। পঙ্গুত্ব নিয়েও এই ৪০ বছর বয়সে সংসারের দায়িত্ব সামলে চলেছেন।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে কাবু করতে পারেনি। এখনও নিয়মিত সংসারের কাজ সামলানো দেখাশুনা করেন শয্যাশায়ী মায়ের । আর হাটে-ঘাটে ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাদাম-চানাচুর বিক্রি করে যা সামান্য আয় হয় তা দিয়েই কোনমতে দিন পার করছেন।
২ বছর আগে তার বাবার মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব এসে পরে তার কাঁধে। সংসারের চাহিদা মেটাতে পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে জীবন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে বাদাম-চানাচুর বিক্রির পেশাকে বেছে নেন তিনি।
অমরেশের মা সবিতা রাণী জানান, অভাবের সংসারে অমরেশের চিকিৎসা করাতে কলকাতা পর্যন্ত গিয়েছেন। সেখানে চিকিৎসা দিয়ে মাজা থেকে হাত পর্যন্ত উন্নতি হয়েছিলো। পরে আর টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি।
অমরেশের অধিকারী বলেন, বাবার তৈরি ঘরের চালা দিয়ে পানি পড়ে। একটা ঘরের ইচ্ছা রয়েছে তার। যেখানে অন্তত রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available