সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: উত্তরের একসময়ে মঙ্গাপীড়িত জেলা নীলফামারীতে এবার আগাম আলু চাষে ঝুকেছে কৃষক। তিস্তা সেচ প্রকল্পের আর্শীবাদে নীলফামারী জেলায় এখন সবরকম ফসলই ফলানো সম্ভব হচ্ছে। তবে এ বছড় জেলায় আলুর আবাদ তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। কৃষকরা ঝুকেছে আগাম জাতের আলু চাষে। কিন্তু এ বছড় আলুর ফলন ভালো না হওয়ায় কৃষক মুখে এখন হাসির পরিবর্তে কান্না।
অনেকেই আগাম আলু তুলতে গিয়ে দেখছেন এবছর ফলন মোটেও ভালো হয়নি, রোপিত আলুগুলো পরিপুষ্ঠ ও সবল হয়নি। প্রথমে আলুর দাম বেশি হলেও পরে দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকরা।
ডিমলার আলু চাষী লাজু হোসেন বলেন, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। অথচ এই আলুই গত বছর বিক্রি হয়েছিলো ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। আর আলু বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। অনেকে ১০০ টাকা দরেও বিক্রি করছেন আগাম চাষ করা আলু।
চাষীদের অভিযোগ ভারত থেকে নতুন আলু আমদানি করা হচ্ছে। একারণে কৃষকরা আগাম আলুর ভালো দাম পাচ্ছেন না। এছাড়া দেশে হরতাল-অবরোধে কারনে আগাম আলুর দামে ধস নেমেছে বলেও তারা মনে করেন।
নীলফামারী জেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলুর চাষ করা হয়েছে। ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে আলু উৎপাদন করে নিজেদের অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়েছেন জেলার অনেক কৃষক। দেশে আগাম জাতের আলু এ জেলায় প্রথম উৎপাদন শুরু করেন স্থানীয়রা।
সদর উপজেলার লক্ষীচাপ বসুনিয়াপাড়ার কৃষক মনোরঞ্জন রায় বলেন, আমি এবার ৩ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছি। রোপনের ৫২ দিনের মধ্যে আগাম আলু উত্তোলন করতে শুরু করি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এবার আলুর ফলন আশানুরুপ ভালো হয়নি, পাশাপাশি দামও কম পাওয়া যাচ্ছে।
আরেক কৃষক ললিত চন্দ্র রায় বলেন, আগাম আলু চাষ করে প্রতি বছর লাভবান হয়েছি। কিন্তু এ বছর লোকসান হবে বলে মনে হচ্ছে। আমি সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। ফলন ভালো হয়নি, পাশাপাশি দামও ভালো পাচ্ছি না।
কিশোরগঞ্জের কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, এবার জমিতে আলু বীজ লাগানোর পর বৃষ্টির কারণে অনেক আলু গাছই নষ্ট হয়ে গেছে। একারনে ফলনও অনেক কম হয়েছে।
স্থানীয় আলু ব্যবসায়ী ওসমান গনি বলেন, এবার আগাম আলু চাষ করে কৃষকরা ভালো লাভ করতে পারেনি। এদিকে হরতাল অবরোধের কারণে আলু পরিবহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন ভারতের আলু আসায় বাজারে নতুন আলুর দাম অনেকটাই কমে গেছে। আমরা যে আলু ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে কিনেছিলাম সেই আলুই এখন দাম কমিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে।
নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর ২১ হাজার ৭১২ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে আগাম আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৮০০ হেক্টর।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available