উত্তম কুমার, বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) : বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের ডিসি রোড ও ফরিদপুর ইউনিয়নের কারখানা নদীর খেয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ পারাপার করে। কবাই, ফরিদপুর ও দূর্গাপাশা ইউনিয়ন, বাউফলের কালিশুরি, ধুলিয়া, কেশবপুর, সূর্যমনি, নূরাইনপুর, কনকদিয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বরিশাল ও বাকেরগঞ্জ সদরের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই ডিসি রোড খেয়াঘাট। ব্রিজ না থাকায় প্রতিনিয়ত তাদেরকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। শীতের মৌসূমে নদী যখন ভাটায় শুকিয়ে যায়, তখন দূর্ভোগ আরও চরম আকার ধারণ করে। নদীর এই জায়গাটিতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত কোন আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।
স্বাধীনতার ৫২ বছরেও আশার আলো দেখেনি এই অঞ্চলের লাখো মানুষ। তাই যুগের পর যুগ ধরে বাধ্য হয়েই ট্রলারে করে মানুষদের নদী পার হতে হচ্ছে।
কবাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: জহিরুল হক বাদল তালুকদার জানান, এই একটি সেতুর জন্য দুই উপজেলার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ফরিদপুর ও দুর্গাপাশা ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা বাউফলের প্রায় লাখ লাখ মানুষকে এখন বিভিন্ন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন, কেউ যদি রাতের বেলা অসুস্থ হয়, তাহলে তাকে মেডিকেলে নেয়া অসম্ভব হয়ে পরে। সন্ধ্যা হলেই খেয়া পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। অনেক সময় রোগীরা পথের মধ্যেই মারা যায়। কারণ তখন খেয়াঘাটে নৌকা থাকে না। শুকনো মৌসুম দিনের বেলায় প্রায় ৪ ঘন্টা খেয়া পারাপার বন্ধ থাকে। কারখানা নদীতে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে দুই উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। এই সেতুটি নির্মাণ করা হলে বাউফলের সাথে বরিশাল দূরত্বও কমে যাবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কবাই ইউনিয়নের ডিসি রোড কারখানা নদীতে ভাটা থাকায় দুপুর থেকে শেষ বিকেল অব্দি প্রায় ৪ ঘণ্টা জোয়ারের অপেক্ষায় মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এরপর প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির চরের মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেলটি ট্রলারে উঠাতে হয়। এরকম ঘটনা বাকেরগঞ্জ ডিসি রোড খেয়াঘাটের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।
শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কম থাকায় চরের মধ্যকার খালটি শুকিয়ে যায়, প্রায় আধা কিলোমিটার কাদামাটির চর পেরিয়েও অনেক সময় রক্ষা হয় না। ডুবোচর থাকায় হাটু সমান পানির মধ্যেই ট্রলারে ওঠানামা করতে হয় যাত্রীদের। ফরিদপুর ও দূর্গাপাশা ইউনিয়ন, বাউফলের কালিশুরি, ধুলিয়া, কেশবপুর, সূর্যমনি, নূরাইনপুর, কনকদিয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বরিশাল ও বাকেরগঞ্জ সদরের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই ডিসি রোড খেয়াঘাট।
গত কয়েক বছর চরের মধ্য দিয়ে নদীর পাড় পর্যন্ত কাঠের পুল দিয়ে মানুষের হাটার ব্যবস্থা করা হলেও গত বছর এবং চলতি বছর তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন নি। ট্রলারের মাধ্যমে বাকেরগঞ্জ ও বাউফল উপজেলার মানুষ কারখানা নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলা শহর ও জেলা শহর বরিশালে আসছে। দুই উপজেলার চলাচলকারী লোকজনের মধ্যে স্কুল-কলেজের অন্তত এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া সেতুটি নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ সেতু নির্মাণ হলে দুই উপজেলার সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন হবে। আমরা অতীতেও চেষ্টা করেছি জাইকা সংস্থা ও এলজিইডি থেকে বরাদ্দ নিয়ে সেতুটি নির্মাণের। এখনও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available