পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেনসহ ৬ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে দাশুরিয়া ডিগ্রী অনার্স কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
১৩ ডিসেম্বর বুধবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের সিএনজি পাম্পের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ছেলের গুরুতর আহত হওয়ার খবর পেয়ে ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর হোসেনের পিতা আকমল হোসেন (৬০) হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বিকেলে মুলাডুলি মুক্ত মঞ্চে বর্ধিত সভায় যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে আলমগীর ও তার কর্মী-সমর্থকরা দাশুড়িয়া দিয়ে মুলাডুলি যাচ্ছিলেন। এ সময় দাশুড়িয়া সিএনজি পাম্পের সামনে পৌঁছামাত্র দাশুড়িয়া ডিগ্রী অনার্স কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে আলমগীরের দুই পা ভেঙে যায় এবং ছাত্রলীগের অন্তত ৬ কর্মী আহত হন।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। আলমগীরসহ দু'জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ছেলের গুরুতর আহত হবার খবর পেয়ে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে বাড়িতে থাকা আলমগীরের বাবা আকমল হোসেন স্ট্রোক করে মারা যান।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মল্লিক মিলন মাহমুদ তন্ময় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, 'মুলাডুলি ইউনিয়ন ছাত্রলীগ আয়োজিত বর্ধিত সভায় আমিসহ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ অতিথি ছিলেন। সেখানে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্ব করার কথা ছিল। বর্ধিত সভায় যোগ দেয়ার প্রাক্কালে দাশুড়িয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও তার অনুসারীরা আলমগীরের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আলমগীরের দুই পা ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে তার পিতা স্ট্রোক করে মারা গেছেন।’
তিনি বলেন, 'আমরা উপজেলা ছাত্রলীগ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে উপজেলা ছাত্রলীগ এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ জানানো হবে।’
মুলাডুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মিঠু জানান, 'আলমগীর ও ফাহিম দু'জনই আমার নিকট আত্মীয়। কলেজ সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে তাদের দু'জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল বলে শুনেছি। সেই দ্বন্দ্বের সূত্র ধরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।’
মুলাডলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম মালিথা জানান, 'ঘটনাটি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে। ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনভাবে কাম্য নয়। আহত বেশ কয়েকজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে শুনেছি।’
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত দাশুড়িয়া ডিগ্রী অনার্স কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, এই ঘটনার পর ঐ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের জন্য বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available