আবদুল্লাহ আল নোমান, নোবিপ্রবি : ভর্তি পরীক্ষার পর দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলেও শ্রেণিকক্ষে বসতে পারেনি গুচ্ছ পদ্ধতির ২০২১-২০২২ শিক্ষবর্ষের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলেও এই পদ্ধতি এখন শিক্ষার্থীদের জন্য হতাশার কারণ। গুচ্ছ পদ্ধতির কবলে পড়ে সেশন জটের আশঙ্কায় রয়েছে বিভিন্ন বিশ্বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
ব্যতিক্রম নয় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) নতুন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষার ৬ মাস পার হলেও ক্লাসে বসতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। গুচ্ছ পূর্ববর্তী সময়ে নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে উৎসবমুখর পরিবেশে নতুন সেশনের ক্লাস শুরু করলেও বর্তমানে এ পদ্ধতির ফলে সেটা দীর্ঘায়িত হচ্ছে ।
গুচ্ছ পদ্ধতির ফলে একই সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্বিদ্যালয়ে আবেদনের সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে একাধিক বিশ্বিদ্যালয়ে ভর্তি রেখে পরবর্তীতে নিজেদের সুবিধামতো ভর্তি বাতিল করে অন্যত্র ভর্তি হচ্চে তারা। ফলে নোবিপ্রবিতে ৮ম মেধা তালিকা আর গণবিজ্ঞতির পরও প্রায় ২০০ আসন খালি রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, আসন বেশি ফাঁকা থাকায় গণবিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তারপরও আসন পূরণ হচ্ছে না। সর্বশেষ মেরিট লিস্ট ডাকার পরও খালি থাকে ১৯৪টি আসন। এ ছাড়াও এখন পর্যন্ত কোটায় ভর্তির শূন্য আসন আছে ১০টি। পরবর্তীতে আরও শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করে চলে যায়। শুন্য আসনের বিপরীতে আবারও শিক্ষার্থীদের ডাকা হবে।
জিএসটি ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমানোর পরিবর্তে ভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
আব্দুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘৬ মাস আগে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে এখনও আমরা ক্লাস শুরু করতে পারি নি। শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন উদাসীনতায় আমরা চরম হতাশ হয়ে পড়ছি।
নাজমুন নাহার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এমনিতেই করোনার কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এখন এভাবে পড়ালেখা শুরু করার আগেই যদি আমরা সেশনজটে পড়ি, তাহলে এর থেকে কীভাবে উঠে দাঁড়াবো? সরকারের উচিৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিশেষ নজর দেওয়া।
নোবিপ্রবির গুচ্ছ টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুর রাহমান খান বলেন, স্বতন্ত্র ভর্তি প্রক্রিয়া চালানো এবং গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়ার মাঝে অনেক ব্যবধান তৈরি হয়েছে। জিএসটি যেভাবে নিয়ম করে দেয়, আমাদের সেইভাবেই কার্যক্রম চালাতে হয়। ফলে বর্তমানে অনেক জটিলতা তৈরি হয়েছে।
গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে একমত পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর। তিনি বলেন, গুচ্ছতে ভর্তি প্রক্রিয়া হওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে আছে অপেক্ষমান শিক্ষার্থীরা। ভোগান্তি কমানোর জন্য চালু হওয়া পদ্ধতি এখন আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার অর্ধবছর পার হলেও আমরা এখনও ২০২১-২২ সেশনের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারি নি।
গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার বিষয়ে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, আপাতত গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হওয়া পসিবল না। আমাদের রাষ্ট্রপতির অনেকদিনের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে এই গুচ্ছ পদ্ধতি।
গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় সেশনজটের প্রশ্নে নোবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, জটিলতা তৈরি হয়েছে মূলত শিক্ষার্থীদের কারণেই। তারা অনেক জায়গায় মাইগ্রেশন অন করে রাখে। আবার আদালতে রিটও করেছে। সবমিলিয়ে শিক্ষার্থীদের কারণেই একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হতে এতো দেরি হচ্ছে। আমরা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ২০২১-২২ সেশনের ক্লাস শুরু করবো বলে আশাবাদী।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available