ভোলা সদর প্রতিনিধি: খেজুর রস, খেজুর গুড়, দক্ষিণের দ্বার দ্বীপ জেলা ভোলা। এক সময়ের এই স্লোগান এখন শুধুই বুলি। কারণ, গত এক দশকে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে এ জেলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরগাছ ও গাছির সংখ্যা। এখানকার ইটভাটাগুলোতে এখন জ্বালানি হিসেবে অন্য গাছের সঙ্গে খেজুরগাছও পোড়ানো হয়। এতে জেলাজুড়ে খেজুর রস কমে যাওয়ায় বেড়েছে ভেজাল গুড় তৈরির প্রবণতা।
জেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ১১ বছর আগে ভোলায় প্রায় ৪৫ হেক্টর জমিতে ৩৪ হাজার ৯৮৫টি খেজুরগাছ ছিল। সে সময় গাছির সংখ্যা ছিল ৩৫০ জন। বর্তমানে এ জেলায় ৪৪ হেক্টর জমিতে ২৫ হাজার খেজুরগাছ রয়েছে। আর গাছি রয়েছে মাত্র ১৬০ জন। এর ফলে কমেছে খেজুর রস সংগ্রহের পরিমাণ। এই সুযোগে বেড়েছে বিশুদ্ধ রস ও গুড়ের দাম।
ভোলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ইটভাটার সামনে খেজুরগাছের গুঁড়ি স্তূপ করে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারে জেলায় খেজুরগাছ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া একসঙ্গে মেহগনি ও রেইনট্রি গাছ লাগানোর ফলে খেজুরগাছে রস না হয়ে অল্প দিনেই সেগুলো মরে যায়। তাই খেজুর রস ও গুড় রক্ষায় সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে গাছিদের সহযোগিতার দাবি এলাকাবাসীর।
জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, গুড়ের ঐতিহ্য যাতে হারিয়ে না যায়, সে জন্য জেলা প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। গাছিরা যাতে রস গাছের নিচ থেকেই সংগ্রহ করতে পারে, সে বিষয়ে কর্মশালা করা হয়েছে। অনেক গাছিকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।
অসাধু ভেজাল গুড় ব্যবসায়ীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, যারা চিনি দিয়ে অসাদু উপায়ে খেজুর গুড় তৈরি করেন, তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available