বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: শীত মৌসুম আসতে না আসতেই অবৈধভাবে কৃষিজমি থেকে মাটি ও বালু উত্তোলনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলসহ বিভিন্ন উপজেলায় চলছে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন। বাজিতপুর, নিকলী ও কটিয়াদীসহ বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়ছে অহরহ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রভাবশালী অসাধু একটি মহল, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা ও কিছু সাংবাদিককে বিভিন্ন কৌশলে হাত করেই কৃষিজমি থেকে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে আসছে। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করা তো দূরের কথা মুখ খুলতেও ভয় পায় কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কটিয়াদী উপজেলার মুমুরদিয়া, করগাঁও এবং চান্দপুরসহ প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই রয়েছে বালু ও মাটি খেকোদের দৌড়াত্ম্য। সম্প্রতি কটিয়াদী পৌরসভার ভরারদিয়া মৌজাতে জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে নায়েবের করা মামলায় এক আইনজীবী গ্রেফতার হয়ে পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
চান্দপুর ইউনিয়নের বালিরা গ্রামে বালু উত্তোলনে বাড়িঘর ভাঙনের প্রতিকার চেয়ে আরেক আইনজীবী স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। মানিকখালী থেকে করগাঁও রোডে বাট্টা পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় রাস্তার দু'ধারে রয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলনের হিড়িক। এখানেও স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত রয়েছে।
নিকলী উপজেলার জারইতলা ইউনিয়নের সাজনপুর ব্রিজ সংলগ্ন হাওরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের দৃশ্য দেখা গেছে। একাজে জড়িত কুর্শা গ্রামের লাল মিয়া নামে এক ব্যক্তির কথা বলেন শ্রমিকরা। তবে তার ফোন নাম্বার খুঁজ করে না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর, হালিমপুরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নেও দেখা গেছে কৃষিজমি থেকে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে।
মাটি পরিবহনে শতশত অনুমোদনহীন ট্রাক চলাচল করতেও রাস্তায় দেখা যাচ্ছে। এ কারণে রাস্তাঘাট ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে দিনদিন।
কৃষকরা বলেন, অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটায় তাদের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। জমি উঁচু নিচু হয়ে যাচ্ছে। টপ সয়েল নিয়ে যাওয়ায় জমি উর্বরতা হারাচ্ছে দিনদিন। এভাবে প্রতিবছর জমির মাটি ভেকু দিয়ে কাটতে থাকলে একসময় ফসলি জমি সব বিনষ্ট হয়ে শেষ হয়ে যাবে, এতে উৎপাদন কমে যাচ্ছে।
নিকলী উপজেলার সদ্য যোগদানকৃত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া আক্তারের কাছে এ বিষয়টি অবগত করা হয়। তিনি নিকলী উপজেলা এরিয়াতে এবিষয়ে মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি এভাবে জমি কেটে মাটি তোলাকে ঘৃণ্য কাজ বলে জানান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available