ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: উত্তরের জনপদ জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে আগাম জাতের আলু উত্তোলনের ধুম পড়েছে মাঠে মাঠে। এই আলুর ফলন কম হলেও দাম ভালো থাকে। তাই প্রতিবছর ভালো দাম পাওয়ার আশায় চাষিরা আগাম জাতের আলু রোপণ করেন। এ বছর রোপণ করা আগাম জাতের আলু বাজারে বিক্রি করে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা জয়পুরহাট। এবারও চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের আশা করেছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এ উপজেলায় আলুর লক্ষ্যমাত্রা ছিল-৮ হাজার ৪৮০ হেক্টর। তবে চলতি মৌসুমে বেশি আলু রোপণ হয়েছে। এবছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৮০ হেক্টর। কৃষি অফিস আরও জানায়, উপজেলায় আগাম জাতের আলুর মধ্যে মিউজিকা, কারেজ, গ্রানোলা, সানসাইন, বারি আলু ৮৬ ইত্যাদি বেশি চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষেতলাল পৌর মহল্লার সূর্যবান, ধনকুড়াইল, মালিপাড়াসহ অনেক এলাকায় কৃষাণ-কৃষাণীরা আগাম জাতের আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন মূলত মিউজিকা, গ্রানোলা, ক্যারেজ আলু বেশি তোলা হচ্ছে।
আলুচাষিরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর আলুর দাম অনেক বেশি। ফলন কম হলেও দাম ভালো পাওয়ায় অনেকটা লাভবান হচ্ছে তারা। এ আলু আরও কিছুদিন মাঠে রাখলে ফলন বেশি পেত, কিন্তু তখন দাম কম হতো সেই তুলনায় বর্তমান বাজার অনুযায়ী আলু বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়ে অনেকটা লাভবান হচ্ছেন তারা। বর্তমানে এ উপজেলায় একদিকে চলছে আলু তোলা, আরেক দিকে চলছে বোরোর চারা রোপণের কাজ, ফলে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আলু তোলার পরে লাগানো হয়ে থাকে বোরোর চারা সে কারণে সর্বত্র চলছে এখন আলু তোলার ধুম। আলুর ভাল দাম পাওয়ায় অনেকটা খুশি হয়ে উঠেছেন কৃষকরা।
১০ জানুয়ারি বুধবার সকালে আলু বিক্রি করা পৌর এলাকার ইসলামপুর গ্রামের রায়হান ইসলাম বলেন, আমি ৪৮ শতক জমিতে মিউজিকা আলু লাগিয়েছিলাম। আলু তুলেছি প্রায় ৭৫ মণ হয়েছে। বিক্রির জন্য দাম হয়েছে প্রতি মণ ১ হাজার ৭০০ টাকা। জমিতে আলু রোপণে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। আর আলু বিক্রি করলাম প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আলুর বাজার ভালো থাকায় আমি অনেক খুশি।
পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক ছাইম বলেন, আমি ২৫ শতক জমির আলু রোপণ করেছিলাম। আনুমানিক খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। আলু বিক্রির জন্য দাম হয়েছে ১ হাজার ৭০০ টাকা মণ, আমি প্রায় ৪২ হাজার টাকার আলু বিক্রয় করতে পারবো এই জমি থেকে। এবছর আলুর ভালো দাম হওয়ায় আমি অনেক খুশি।
আলুর পাইকারি ক্রেতা পৌর মহল্লার আজাদুল ও লতিব বলেন, বাজারে এখন আগাম জাতের আলু উঠতে শুরু করেছে। এসব আলু ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। এবছর আলুর ব্যাপক দাম যার কারণে কৃষকরা অনেক লাভবান হচ্ছেন। তবে আলু কাঁচামাল আর কাঁচাবাজারের কোনো গ্যারান্টি নেই? এক দিনের ব্যবধানেই আলুর দাম বাড়তেছে আবার কমতেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে আগাম জাতের আলু উত্তোলন। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবছর আলুর ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকরা এই আলু প্রতি মণ ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ পর্যন্ত দামে বিক্রি করতে পারছেন। এতে কৃষকরা অনেকটা লাভবান হচ্ছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available