কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: ১০ জানুয়ারি বুধবার দিবাগত রাতে জয়পুরহাটের কালাইয়ের বিভিন্ন মাঠে অবস্থিত গভীর নলকুপের ৭টি বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি এসব নলকুপের ঘরে প্রতিটি মিটার বাবদ ৫ হাজার টাকা বিকাশ করলে চুরি হওয়া মিটার ফেরত দিবে বলে একটি চিরকুট লিখে ফেলে যায়। এমন ঘটনায় সঙ্কিত এলাকার গভীর নলকুপ মালিকরা।
মালিকরা পুলিশ এবং স্থানীয় পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করতেও সাহস পাচ্ছেন না।কারণ হিসেবে তারা বলেন,অভিযোগ করে কোনো লাভ হবে না। বরং চোরদের টাকা দিয়ে মিটার ফেরত পেলেই ঝামেলা থেকে বেঁচে যাই। তা না হলে চোরদের দাবির চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে নিতে হবে পল্লীবিদ্যুৎ অফিস থেকে। আবার সময়ও বেশি লাগবে।
গভীর নলকুপের মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বুধবার দিবাগত রাতে প্রচণ্ড কুয়াশা ছিল। দশ হাত জায়গাও দেখা যায় না। এরইমধ্যে চোররা কালাই পৌরশহরের কাজীপাড়া মহল্লার বজলার রহমান ,টিএন্ডটি মোড়ের মোজাফ্ফর হোসেন, বালাইটগ্রামের রুবেল হোসেন, থুপসাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর, নওপাড়া গ্রামের বাবলু মিয়া, হাজিপাড়া গ্রামের কোরবান আলী ও আব্দুল লতিফের মাঠের মধ্যে অবস্থিত গভীর নলকুপের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করে নিয়ে যায়।
৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মিটার ফেরত পেতে একটি চিরকুটে তাদের (০১৩৩১-৪৮৯৩০১) বিকাশ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়। টাকা দেয়ার সময় অবশ্যই মিটার নম্বর উল্লেখ করতেও বলা হয়। প্রত্যক মিটারের ঘরেই চিরকুট দেওয়া হয়েছে বলে জানান গভীর নলকুপের মালিকরা। চোরদের দাবিকৃত টাকা দিয়ে মিটার ফেরত নিতে মরিয়া গভীর নলকুপ মালিকরা।
জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কালাই জোনাল অফিসের ডিজিএম হামিদুল হক জানান, গত রাতে মিটার চুরির বিষয়ে ৭ জনের মধ্যে একজন মালিক অফিসকে অবগত করেছে। তবে শুনেছি সাত জনেরই মিটার চুরি হয়েছে।এর আগেও বেশ কয়েকটি মাঠে ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, চুরি হওয়া মিটার পুনরায় লাগানোর কোনো সুযোগ নেই। মালিকদের সরকার নির্ধারিত টাকা অফিসে জমা দিয়ে মিটার নিতে হবে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এ ই মহুর্তে তার মনে নেই ।তবে ৬ থেকে ৭ হাজারের বেশি হবে না।
কালাই কাজীপাড়া মহল্লার গভীর নলকুপের মালিক বজলার রহমান বলেন, টাকা দিয়ে মিটার ফেরত নিতে চোরদের বিকাশ নাম্বারে কথা বলেছি। তারা ফেরত দিতে চায় কিন্তু পুলিশকে জানালে আমি আর নলকুপ চালাতে পারব না। তাই পুলিশকে জানাইনি।এমনকি পল্লীবিদ্যুৎ অফিসকেও অবগত করিনি।
আরেক মালিক বাবলু মিয়া বলেন, এর আগে চোররা আমার গভীর নলকুপে এসে দায়িত্বে থাকা লাইনম্যানের নিকট টাকা চেয়ে গেছে। টাকা না দেওয়ায় আজ চোররা আমার গভীর নলকুপের মিটার চুরি করে নিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে অনেকেই আলুর ক্ষেতে সেচ দিতে এসে ফেরত গেছে। মিটার চুরি হওয়ায় বড় বিপদে পরেছি।
চুরির তথ্য নিশ্চিত করে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারী বলেন, চুরি রোধে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। আগের চুরির ঘটনায় থানায় মামলাও রয়েছে। পুলিশ চোরদের গ্রেফতারও করেছে কিন্তু চুরি রোধ হচ্ছে না। তাই তিনি মামলার পাশাপাশি চুরি রোধে গ্রাহকদের স্থায়ীভাবে মিটার ও ট্রান্সফরমার পাহারা দেওয়ার পরামর্শ দেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available