কালাই (জয়পুরহাটে) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে কৃষকদের ধান বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে এক আড়ৎদারের বিরুদ্ধে। টাকা ফেরত পেতে ১২ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে পাওনাদার কৃষকরা একত্রিত হয়ে উপজেলার ইটাখোলা হাটে জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক সড়কে প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে। এছাড়া তারা ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
পাওনাদার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বোরো মৌসুমে ইটাখোলা হাটের পার্শ্ববর্তী এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান বিক্রি করার জন্য এ হাটে নিয়ে যায়। সেই ধান হাটে অবস্থিত আড়ৎদার জে আর ট্রেডার্সের স্বত্তাধীকার মামুনুর রশিদের লোক রাজিব হোসেন, জাকির হোসেন, আব্দুর রশিদ, মোশারফ হোসেন, খোকা মিয়া এবং লিমন হোসেন মিলে স্লিপের মাধ্যমে ক্রয় করেন। স্লিপ অনুযায়ী কৃষকরা ওই আড়ৎঘরে ধানগুলো ঢেলে দেয়। এরপর তারা টাকা নিতে গেলে বলা হয়,আপনারা অপেক্ষা করেন একটু পরে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে এনে ধানের মূল্য স্লিপ অনুযায়ী পরিশোধ করা হবে।
ওইদিন ৩-৪ ঘন্টা পর আড়ৎদার কৃষকদের বলেন, আজ ব্যাংকে টাকা নেই, তাই আপনাদের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। আপনারা আগামীকাল এসে টাকা নিয়ে যাবেন। সে অনুযায়ী কৃষকরা পরের দিন আড়ৎদারের ঘরে আসলে তিনি টাকা না দিয়ে কৃষকদের সাথে টালবাহনা করেন এবং উল্টো তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। নিরুপায় হয়ে ২৬ জন কৃষক একত্রিত হয়ে শুক্রবার দুপুরে ইটাখোলা হাটে জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক সড়কে প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন। এরপর তাদের স্বাক্ষরিত প্রায় ২০ লাখ টাকা দাবি করে তারা ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেন।
আবু শাহিন নামে এক পাওনাদার বলেন, বোরো ফসলের ধান তার কাছে বিক্রি করেছি। ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাবো। আজ দিব, কাল দিব বলে গত তিন মাস ধরে আমাকে ঘুরাচ্ছে। আমার কাছে ধান নেয়ার স্লিপ ছাড়া আর কিছুই নেই। আমার মত আরও অনেকেই তার নিকট ধানের টাকা পাবে। এখন কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। মামলা করা ছাড়া উপায় দেখছি না।
আরেক পাওনাদার আজগর আলী বলেন, আমি ৮৬ হাজার টাকা পাবো। টাকা নিতে গেলে উল্টো আমাকে মারপিটের হুমকি দেয়। আর বলে টাকা নিতে আসলে তোকে ইটাখোলা হাট ছাড়তে হবে। এ অবস্থায় কি করবো তা বুঝতে পারছি না। আমার খুব অভাব, টাকার খুব দরকার।
আড়ৎদার জে আর ট্রের্ডাসের স্বত্তাধীকার মামুনুর রশিদ বলেন, তারা টাকা পাবে এটা সত্য। তবে আমি তাদের কোনো হুমকি দেয়নি। আসলে মোকাম থেকে টাকা না পাওয়ায় আমি তাদের টাকা দিতে পারিনি। এটা আমারই ব্যর্থতা।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফতাবুজ্জামান আল ইমরান বলেন, ব্যবসায়ীর নিকট থেকে টাকা পাওয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ বা স্মারক লিপি দেননি। অভিযোগ পেলে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available