হাতিবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি: এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ছোট ছোট দুইটি বাচ্চাকে নিয়ে ঘুমে আছেন। তাদের গায়ে একটি মাত্র কম্বল। পাশে আর একজনের ভাগ্যে একটি কম্বলও জুটেনি। লুঙ্গি গায়ে দিয়ে ঘুমাতে চেষ্টা করছেন। ১৩ জানুয়ারি শনিবার রাতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে এভাবে রাতযাপন করছেন হাজারো মানুষ। আকাশকে ছাদ বানিয়ে সড়কের আইল্যান্ড, বাসস্ট্যান্ড ও রেলওয়ে স্টেশনে কাঁথা বা চাদর মুড়ি দিয়ে নিশ্চিন্তেই ঘুমাচ্ছেন ছিন্নমূল মানুষেরা।
সন্ধ্যা গড়ালেই বাড়ছে কুয়াশা। সারাদিন শীতল হাওয়ায় তেজহীন সূর্য। বিত্তবানদের কাছে উপভোগ্য হলেও গৃহহীন ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে দুর্বিষহ। সারাদিন নানা কাজ শেষে রেলওয়ে স্টেশন, খোলা মাঠ, বাসা-বাড়ি ও অফিস-আদালতের বারান্দাসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া এসব উদ্বাস্তু মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা। শীত থেকে রেহাই পেতে অনেকেই পলিথিন টাঙিয়ে রাস্তার পাশে শুয়ে-বসে রাত পার করছেন, কেউ বা আগুন জ্বেলে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের গেট থেকে টিকিট কাউন্টারের সামনে পর্যন্ত মাটিতে শুয়ে আছে ১৫/২০ জন মানুষ। এদিকে অনেকে বসেও আছেন। রেল স্টেশনের বাইরে টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রায় পুরো মেঝেতেই শুয়ে-বসে রাতযাপন করছে তারা।
এদিকে টিকিট কাউন্টারের বাইরে হাঁটা পথেও মাটিতে সারিবদ্ধ হয়ে বস্তা/প্লাস্টিক অথবা কাঁথা বিছিয়ে গাঁয়ে একটি চাদর বা কাঁথা মুড়ে ঘুমাচ্ছেন অনেকে। এখানে নারী-শিশু, বৃদ্ধদেরও দেখা গেছে। কেউ কেউ খবরের কাগজ বিছিয়ে শোয়ার জায়গা করে নিচ্ছেন।
শহরের বিভিন্ন সড়কের আইল্যান্ড, বাসস্ট্যান্ড ও রেলওয়ে স্টেশনের ভাসমান এসব ছিন্নমূল মানুষের বসবাস ও রাতযান করতে দেখা যায়। শীত এলেই এসব মানুষের কষ্ট যেনো সীমা থাকে না। কারণ, তাদের পরনের কাপড় ছাড়া শীত নিবারণের জন্য আর কিছুই থাকে না।
তাই প্রশাসন কিংবা সামর্থ্যবান মানুষেরা কখন একটা শীতের কম্বল নিয়ে আসবেন সেই আশায় অপেক্ষায় থাকেন তারা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available