মেহেদী হাসান তানিম, গুরুদাসপুর (নাটোর) : গ্রামাঞ্চলের মানুষের আদি উৎসবগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে পলো দিয়ে মাছ ধরা। আবহমানকাল ধরে মানুষ এই উৎসবটি পালন করে আসছে।
এই উৎসবের উদ্দেশ্য হলো- এই মৌসুমে মানুষকে মাছ ধরতে উজ্জীবিত করা। তাই প্রতিবছর এই সময় এলেই দল বেঁধে লোকজন বিলের মধ্যে পলো হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন মাছ ধরতে। আর এতে শুরু হয় মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। তবে স্থান ভেদে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে এই উৎসবটি পালন করা হয়।
২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার আত্রাই নদীতে পলো দিয়ে চলে মাছ ধরার উৎসব।
এ সময় উপজেলার ধামাইচ বাজার, হেমননগর, মাগুড়া বিনোদ, হামকুড়িয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ছেলে-বুড়োসহ ২ শতাধিক মানুষ কারোও হাতে পলো, ছিটকি জাল, উড়াল জাল, লাঠি জাল, হাত জাল (ঠেলা জাল) নিয়ে ছুটে আসেন নদীর পাড়ে। তারা মনের আনন্দে মাছ শিকার করেন। শোল, বোয়াল মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়ে বেশ খুশি তারা।
চাটমোহর উপজেলা থেকে আসা মাছ শিকারী হাফিজুল ইসলাম বলেন, বছরের দু একদিন মাছ শিকার করার জন্য আমরা সারা বছর অপেক্ষা করি। সবাই মিলে একসঙ্গে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। তবে দিন দিন পরিবেশ ও আবহাওয়ার প্রতিকুলতার কারণে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওয়েরর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পানি হ্রাস এবং অধিকাংশ নদীতে সুতিজাল, কাঠা দেওয়ার কারণে পলো বাওয়া উৎসব এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। প্রাচীন এ উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে হলে সবার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, সকাল থেকে আজকে মনের আনন্দে পলো বাওয়া উৎসবে যোগ দেন উপজেলার কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ।
গুরুদাসপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, পলো বাওয়ায় ধরা পড়া মাছের মধ্যে শোল ও বোয়ালই বেশি। আর পলো বাওয়া উৎসবের আনন্দ যুবক-বৃদ্ধের চেয়ে ছোট ছোট শিশুদের মধ্যে একটু বেশি। তারা তাদের বাবা-চাচা-দাদা-মামা-ভাইয়ের হাত ধরেই উৎসবে শরিক হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available