সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১২ দিন ধরে চলছে তীব্র ঠান্ডা। ঘন কুয়াশা আর তীব্র ঠান্ডায় কাহিল এ অঞ্চলের মানুষজন। বিশেষ করে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় অসহায় হয়ে পড়েছে শিশু ও বয়স্ক মানুষরা।
তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি থেকে ৯ ডিগ্রিতে ওঠা নামা করছে। যার কারণে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায়। সৈয়দপুর ১০০ শয্যা সরকারি হাসপাতালে ভীর করছে এ রোগে আক্রান্তরা।
এদিকে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছেন কতৃপক্ষ।
২২ জানুয়ারি সোমবার সৈয়দপুর ১০০ শয্যা সরকারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে একটি বেডে অসুস্থ্য শিশুরা গাদাগাদি করে শুয়ে আছেন। এদের কারো ডায়রিয়া, কেউ বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। অপরপাশে সর্দি জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেক শিশু ও বয়স্করা।
হাসপাতালে ভর্তি এক অসুস্থ্য শিশুর অভিভাবক মর্জিনা বেগম জানান, প্রথমে সর্দি জ্বর হয়। পরে তা শ্বাসকষ্টে রূপ নেয়। গ্রামে চিকিৎসা নিয়ে ভালো না হলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে নিয়মিত নেবুলাইজ ও অক্সিজেন সরবরাহ দেওয়ায় বাচ্চা অনেকটা সুস্থ্যের পথে।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আরেক শিশুর অভিভাবক আলিয়া বেগম জানান, প্রথমে বমি, এরপর পাতলা পায়খানা। এভাবে দুদিন ওষুধ খাইয়েও সুস্থ্য না হলে নিয়ে আসি হাসপাতালে। এখানে ভর্তির পর অনেকটা উন্নতি হয়েছে।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা সরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ জনপদে শীত আগমনের সাথে সাথে ১ দিন থেকে ৫ বছরের শিশুরা নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, এলার্জিসহ নানা ধরনের শীতজনিত রোগে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়। গত ডিসেম্বর মাসে হাসপাতালে প্রায় আড়াই হাজার শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। তার মধ্যে ৬৫ ভাগ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়। বাকি ৩৫ ভাগ বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয়। হিমেল হাওয়া ও তাপমাত্রা কমার সাথে শীতজনিত রোগের প্রকোপ আরও বেড়েছে। শাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে শিশু ভর্তি হচ্ছে। চিকিৎসকদের তৎপরতা ও হাসপাতালের সঠিক ব্যবস্থপনায় সকলে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরছে।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা সরকারি হাসপাতালের আরএমও ডা. মুহাম্মদ নাজমুল হুদা বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ায় বড়দের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে শীতের কবলে শিশুরা অসুস্থ্য হচ্ছে বেশি। এর জন্য অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে।
তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামার বিষয়ে নীলফামারী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২২ জানুয়ারি সকালে সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত দুই সপ্তাহ ধরে এ জনপদে তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওঠানামা করছে। দিনের অধিকাংশ সময় থাকছে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বলেন, হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। সোমবার সকালে সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available