কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি: রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের সীতাঘাট এলাকা সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীর তীরে বৈঠা হাতে যাত্রী পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছেন ষাটোর্ধ্ব সাফিয়া খাতুন। কর্ণফুলী নদীতে যাত্রী পারাপার করেন তিনি। এতে যা আয় হয় তাতেই কোনো রকমে তার সংসার চলে। কোনদিন ১০০ টাকা আবার কোনদিন ২০০ টাকা, আবার কোনদিন এক টাকাও ইনকাম হয় না। বলতে গেলে অভাবকে নিত্য সঙ্গী করে সাফিয়া এই বয়সে সংসারের বোঝা বয়ে যাচ্ছেন।
কথা হয় সাফিয়া খাতুনের সাথে। তিনি বলেন, শিলছড়ি সীতাঘাট এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম আমার স্বামী। বিগত ৩ বছর আগে তিনি মারা যান। তিনিও নৌকার মাঝি ছিলেন। ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে আমার। মেয়ে ৩ টা বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। ছেলে বিয়ে করে বউ নিয়ে আলাদা হয়ে গেছে। আমি এক মেয়েকে নিয়ে এই বুড়া বয়সে সংসারের বোঝা বয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সীতাঘাটে সীতা মন্দিরে ধর্মীয় উৎসব হলে তখন যাত্রী পারাপারে বেশি সংখ্যক লোক হয়। তখন গড়ে ৩০০ হতে ৫০০ টাকা ইনকাম হয়। আবার অনেকে ছোট নৌকা করে পারাপার হতে চাই না। তখন বড় বোট দিয়ে বেশি লোকজন পারাপার হয়। এছাড়া উৎসব না থাকলে আমার দিনে ১০০ হতে ২০০ টাকা আয় হয়। আবার মাসে গড়ে ৬ থেকে ৭ দিন এক টাকাও ইনকাম হয় না। কিস্তি নিয়ে ছোট্ট নৌকাটি তৈরি করেছি। অনেক সময় কিস্তির টাকাও যোগাড় করতে পারি না। তবে আমি সরকার হতে বিধবা ভাতা পাই। তবুও সবসময় সংসারের অভাব লেগে থাকে। অসুস্থ শরীর নিয়ে আর পারছি না এই বোঝা টানতে।
কথা হয় সীতাঘাট রাম সীতা মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ জ্যোর্তিময়ানন্দ মহারাজের সাথে। তিনি বলেন, আমি প্রায়ই সাফিয়া খাতুনের নৌকা করে পারাপার হই। যতটুকু পারি তাকে সহায়তা করার চেষ্টা করি। তার জীবনটা অনেক কষ্টের।
৫ নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সরোয়ার বলেন, স্বামী নেই এই মহিলার। কোনো রকমে কষ্টে দিনা পার করেন তিনি । ইতোমধ্যে উনার জন্য ভিজিডি কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উনাকে শীতবস্ত্র দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে পরিষদের পক্ষ হতে উনাকে সহায়তা করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available