ডাসার (মাদারীপুর) প্রতিনিধি: বাবার কোটি কোটি টাকার সম্পদ থাকতেও চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে শিল্পপতি নুর ইসলাম হাওলাদারের পরিবার। ৩টি এতিম সন্তানকে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্যের হাত বাড়াতে হচ্ছে শিল্পপতির স্ত্রী হালিমা আক্তারের। মিল কারখানাসহ সমস্ত সম্পদ আত্মসাৎ করে খাওয়ার অভিযোগ পার্টনারদের বিরুদ্ধে।
হিসেব নিকেশ না দিয়ে মৌখিকভাবে লোকসানের দোহাই দিলেও বন্ধ থাকেনি কারখানা (অটো রাইস মিল)। পার্টনারদের কয়েকগুন সম্পদ বাড়লেও তাদের ভাগ্যে জোটেনা কোনো টাকা। ২৪ জানুয়ারি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শিল্পপতি নুর ইসলাম হাওলাদারের স্ত্রী হালিমা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তার স্বামী মৃত মো. নূর ইসলাম হাওলাদার মাদারীপুর সদর উপজেলার কলাবাড়ীতে অবস্থিত বিসমিল্লাহ এগ্রোফুড-এর একজন পরিচালক (মালিক) ছিলেন। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটি শুরুর সময় ৪ জন অংশিদার ছিল। তার মধ্যে আনোয়ার হোসেন নামে একজন তার মালিকানা ছেড়ে চলে যাওয়ায় ৩ জন মালিক অবশিষ্ট থাকে।
তাওহিদুল ইসলাম বিপ্লব ও শাহাদাত হোসেনকে আমার স্বামী তাদের অনুরোধে মানবতার পরিচয় দিতে গিয়ে পরিচালক হিসেবে নেন। আমার স্বামী ২০১৯ সালের ২৪ মে মারা যান। আমার স্বামীর মৃত্যুর পরে পার্টনাররা সেই কৃতিত্বের কথা ভুলে গিয়ে আমার স্বামীর মৃত্যুর পরে সম্পূর্ণ মিলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কোম্পানির নামে থাকা জায়গা জমি আত্মসাতের চেষ্টা করছে।
হালিমা আক্তার জানান, তাকে মামলা দিয়ে ও বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তার স্বামীর নিজের টাকায় ঘটমাঝি ইউনিয়নের মন্টারপুল এলাকার আনন্দ গাইন ও গৌবিন্দ গাইনদের নিকট থেকে ২ একর জমি ক্রয় করেন। সেই জমি প্রতিষ্ঠানের লোন করার জন্য প্রয়োজন বলিয়া তারা প্রতিষ্ঠানের নামে বিনা টাকায় লিখে নেন। সেই জমির উপর ৩ কোটি টাকার লোন পাশ হয়। তবে তার স্বামী মারা যাওয়ার কারণে লোনের টাকা উত্তোলনের জন্য কোনো স্বাক্ষর করেন নাই তিনি। সেই জমি তার ভোগদখলে আছে।
তিনি বলেন, সেই জমির সম্পূর্ণ মালিক আমার স্বামী থাকা সত্বেও তাওহিদুল ইসলাম বিপ্লব ও শাহাদাত হোসেন বলেন, ৩ এর ১ অংশের মালিক তিনি ও তার এতিম সন্তানরা। তবে তারা মুখে ৩ এর ১ অংশের কথা স্বীকার করলেও তারা সম্পুর্ণ জমিটি দখল করে নিতে চেষ্টা করছে। বিগত কয়েক দিন আগে সেই জমিতে থাকা গাছগুলো কেটে বিক্রি করার পায়তারা করছে তারা (পার্টনাররা)।
মাদারীপুর ইটেরপুল ব্যবসা করার জন্য লোন করেন শাহাদাত হোসেন। সেখানে ও তার স্বামীকে লোনের জামিনদার করে তার স্বামীর ১৯ শতাংশ জমির দলিল ব্যাংকে রেখে শাহাদাত হোসেন টাকা উত্তোলন করে। অথচ তার স্বামী মারা যাওয়ার পরে শাহাদাত হোসেন ২ কোটি ৩০ লাখ টাকার মিথ্যা মামলা করেন তার ও তার শ্বশুরের নামে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসানের কোনো হিসেব বিগত ৪ বছর যাবৎ তারা দেয় না। ২০২৩ সালে ২৫ হাজার টাকা করে ৪ কিস্তিতে তাকে মোট ১ লক্ষ টাকা দেন তারা। অংশিদারের ওয়ারিশ হিসেবে তার ও তার সন্তানদের কোনো খোঁজ খবর নেন না তারা।
বিগত দিনে গণ্যমান্য লোকমারফত প্রতিষ্ঠানের ওয়ারিশ হিসেবে লাভ লোকসানের হিসেব চাইলে তারা মৌখিকভাবে জানিয়ে দেন বিগত সব বছর গুলোতেই নাকি শুধু লোকসান হয়েছে।
তাহলে প্রশ্ন সম্প্রতি বছর গুলোতে কীভাবে তারা বিভিন্ন সম্পদ ক্রয় করেছেন? যদি লোকসানই হয় তাহলে মিল এখনো বন্ধ করা হয়নি কেন?
তাদের বর্তমান সম্পদের হিসেব নিলেও আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
তিনি প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তার স্বামীর মৃত্যুর পরে প্রতিষ্ঠানের কি লাভ-লোকসান হয়েছে তা হিসেব করে তার সমস্ত পাওনা যেন তারা তাকে বুঝিয়ে দেন। যাতে সে তার সন্তানদের নিয়ে কোনোভাবে বেচে থাকতে পারেন। তার ও এতিম সন্তানদের ন্যায্য অধিকার বুঝে পাইতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ বিষয়ে তাওহিদুল ইসলাম বিপ্লব দর্জি বলেন, ওই মিলের ৩ এর ১ অংশের মালিক তা সত্যি। তবে ব্যবসায় লাভ-লোকসান থাকবেই। তার সাথে বসে সমাধানের চেষ্টা করবো। তার সম্পূর্ণ হিসেব বুঝিয়ে দেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available