রামপাল (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের রামপালে কথিত এনজিও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসইউএস) নামের একটি এনজিওর ফাঁদে পড়ে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের সদস্য সর্বশান্ত হয়েছেন। এ ঘটনায় ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার রামপাল থানায় পৃথকভাবে দুইটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
অভিযোগে ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সরকার অনুমোদিত লিখে সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসইউএস) নামের একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে একটি অফিস ভাড়া নেয়। এরপর ওই চক্রের সদস্যরা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে সদস্য সংগ্রহ শুরু করে। তারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নারী ও পুরুষদের লোভনীয় অফার দেয়। সদস্যের অবস্থা বুঝে কাউকে গাভি পালনের জন্য লোন, কাউকে দোকান, কাউকে মৎস্য ঘেরের জন্য লোন, কাউকে কৃষি লোন দেয়ার কথা বলে। সুযোগ বুঝে ওই চক্রের সদস্যরা ২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়। তাদের ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার উপজেলার শ্রীফলতলা নতুন রাস্তার মোড়ে রাজ্জাক হাওলাদারের ভাড়া দেওয়া অফিসে গ্রাহকেরা ঋণ নিতে এসে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন।
এভাবে উপজেলার পেড়িখালী গ্রামের বাদশা ইজারাদারের স্ত্রী লাইলী বেগমের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা, কাদিরখোলা গ্রামের আতাউর রহমানের স্ত্রী ফিরোজা বেগমের কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা, পেড়িখালী গ্রামের নাজমুল শেখের স্ত্রী ইরানী বেগমের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা, ফরিদ শেখের স্ত্রী চম্পা বেগমের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা, সিকিরডাঙ্গা গ্রামের বুলিনা বেগমের কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা, কাষ্ঠবাড়িয়া গ্রামের মজিদ গাজীর স্ত্রী ময়না বেগমের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা, কাদিরখোলা গ্রামের আলাল শেখের স্ত্রী আবেরুন বেগমের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা, চিত্রা গ্রামের শহিদ শেখের ছেলে তাহিদ শেখের কাছ থেকে ৩৮ হাজার টাকা, সিকিরডাঙ্গা গ্রামের নয়ন দাসের ছেলে অমিত দাসের কাছ থেকে ২ হাজার টাকা, বড়কাটালী গ্রামের মেহেদী হাসানের স্ত্রী সুমি বেগমের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা, চিত্রা গ্রামের কামরুল খানের স্ত্রী জেসমিনের কাছ থেকে ৩৪ হাজার টাকাসহ পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, চটকদার প্রলোভনে ফেলে মোহাচ্ছন্ন করে কোনো রশিদ ছাড়া ওই প্রতারক চক্র সফলভাবে এই বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ সবুর রানা প্রতিবেদককে জানান, গ্রামের সহজ সরল মানুষের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে প্রতারক চক্র এভাবে সহজে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সরকারিভাবে বা স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এমন প্রতারণার বিষয়ে সচেতন করা হলেও সেটি কোনো কাজ হয়নি। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে সেজন্য সকলকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন ওই সমাজ কর্মী।
এ ব্যাপারে রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটা ফোন নম্বরও পাওয়া গেছে। দ্রুত তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, এজাতীয় কোনো এনজিওর সদস্যরা কারও কাছে লোভনীয় অফার দিলে সাথে সাথে রামপাল থানা অথবা ৯৯৯ এ কল করে সহযোগিতা নিলে প্রতারণা থেকে মুক্ত থাকা যাবে। পাশাপাশি সকলের সচেতন হতে হবে বলে মত দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available