হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলের ব্রাহ্মনডাঙা গ্রামের নারীদের কুমড়ার বড়ি তৈরির টাকায় চলছে সংসারের খরচ। কলাই ডাল বেটে তাতে চাল-কুমড়া মিশিয়ে তৈরি হয় এই বড়ি। প্রতি বছরই কার্তিক থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত গ্রামটিতে ধুম পড়ে যায় বড়ি তৈরি করার কাজে। বছরের এই ৫ মাস গ্রামের বেশির ভাগ পরিবারের আয়ের অন্যতম উৎস এই বড়ি বিক্রি। তবে ডালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কুমড়ার বড়ির তৈরি করা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কুমড়াবড়ি তৈরির কারিগর মিনতি কুন্ডু জানান, ‘বাজার থেকে ডাল কিনে রাতে ভিজেয়ে রাখি। ভোরে সে ডাল মেশিনে ভাঙিয়ে চাল-কুমড়ার মিশ্রণ রোদে শুকিয়ে তৈরি করি কুমড়াবড়ি। নরম অবস্থায় এগুলো পাতলা কাপড়ে ও মাচায় সারি সারি করে রোদে শুকানো হয়। ভালো করে শুকিয়ে গেলে নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজারে এগুলো বিক্রি করি।’
তিনি আরও জানান, ‘কুমড়াবড়ি থেকে কখনো ৩০ টাকা কখনো ৫০ টাকা প্রতি কেজিতে লাভ হয়। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি বিক্রয় করতে পারি। এতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা থাকে। এই কাজে আমার পরিবারের অন্য সদস্যরা সাহায্য করে। তবে এখন আর আগের মতো লাভ হয় না। কারণ, কলাইসহ প্রতিটা জিনিসের দাম বেশি। কিন্তু কুমড়াবড়ির দাম আছে আগের মতোই।’
নারী উদ্যেক্তা তপতি রানী সরকার বলেন, ‘গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কুমড়াবড়ি বাজারের অন্য পণ্যের তুলনায় দামের দিক থেকে সস্তা। ভালো বাজার পেলে দেশে জনপ্রিয় এ খাবার বিক্রি করে গ্রামের এই নারীরাও স্বাবলম্বী হতে পারবে। নড়াইল সদর উপজেলার ব্রাহ্মনডাঙ্গা গ্রামের অনেক নারী এই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। অনেকে ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এই কাজ করছেন।
বর্তমানে প্রতি কেজি বড়ি তারা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে বিক্রি করে থাকেন।’
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রোকনুজ্জামান বলেন, বাংলার ঐতিহ্য কুমড়ার বড়ি, সারাদেশেই এটা জনপ্রিয়। এর মূল উপকরণ চাল-কুমড়া, মাসকলাই, যা নড়াইলে ব্যাপক চাষ হয়। গ্রামের মহিলারা কুমড়ার বড়ি তৈরি করছেন এতে তাদের যেমন কার্মসংস্থান হচ্ছে, তাদের পরিবার আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। উন্নতবাজার ব্যবস্থা ও কারিগরি সহযোগিতা পেলে তারা আরও উৎসাহী হয়ে এই কাজে আত্মনিয়োগ করবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available