রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) জন্ডিসের প্রকোপ বেড়েছে। এতে গত ১৬ দিনে ৯৮ জন শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়েছেন। আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসের যত্রতত্র দোকানের সরবরাহিত অনিরাপদ খাবার ও পানির মাধ্যমে এ রোগ বাড়ছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসে জন্ডিস সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। ফলে আমরা বিভিন্ন দোকানে নিরাপদ খাবার সরবরাহের জন্য অভিযান পরিচালনা করছি। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানাচ্ছি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসের যত্রতত্র দোকানগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার প্রস্তুত হচ্ছে। ক্যাম্পাসের টুকিটাকি চত্বরসহ বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের সামনের দোকানে অনিরাপদ পানি ও খাবার বিক্রি হচ্ছে। দোকানিরা অনিরাপদ পানি দিয়ে খাবার প্রস্তুত করে সেগুলো খোলামেলা স্থানে রাখছে। অনেকে দোকানের চারপাশে উচ্ছিষ্ট ফেলায় সেখান থেকে রোগ-জীবাণু ছাড়াচ্ছে। আবাসিক হলে দীর্ঘদিন পানির ট্যাঙ্ক পরিষ্কার না হওয়ায় সেখানে রোগ-জীবাণু ও পোকামাকড় বাসা বেঁধেছে। অনেক হলের ক্যান্টন এবং ক্যাম্পাসের দোকানে খাবার হিসেবে সাপ্লাই পানি পরিবেশনের অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে খাবার নিয়ে সমস্যা বহুদিন ধরেই দেখে আসছি। তন্মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ খাবার প্রস্তুত ও সরবরাহ মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মূল্য তালিকা নির্ধারণ করায় দোকানিরা সিন্ডিকেট করে খাবারের মান কমিয়েছে। দ্রুত প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান চান তারা।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল্লাহ বলেন, হলের ডাইনিং ক্যান্টিনের মাছ-মাংস পুকুরের অস্বাস্থ্যকর পানিতে পরিষ্কার করে রান্না করা হয়। হলে টাঙ্কি পরিষ্কারের অভাবে লাল পানি বের হয়। বাধ্য হয়ে বাহিরে খেতে আসলে একই চিত্র দেখা যায়। অনেক দোকানে সাপ্লাই পানি খাবারে দেয়। গ্লাস-প্লেট অপরিষ্কার। যে পানি দিয়ে এগুলো পরিষ্কার করা হয় সেটাও অপরিষ্কার। ফলে পানিবাহিত নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের তথ্য মতে, গত ১৬ দিনে ৯৮ জন রোগী আক্রান্ত হয়েছে। দুইশত রোগীর শরীরে পরীক্ষা করে এ রোগ সনাক্ত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মেডিক্যাল সেন্টারের পরিচালক ডা. তবিবুর রহমান শেখ বলেন, অনিরাপদ খাবার ও পানি থেকে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সেক্ষেত্রে খাবার গ্রহণের সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন এবং নিরাপদ খাবার গ্রহণ করতে হবে। আক্রান্তদের যথাসম্ভব বিশ্রামে থাকতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ক্যাম্পাসে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশ রোধে ইতোমধ্যে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। কয়েকটি অভিযানও দিয়েছি। একটি মনিটরিং টিম দ্রুত সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available