গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের গুরুদাসপুর রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগ উঠেছে ওই কলেজের পিয়ন শাহাদত হোসেনের (৩৫) বিরুদ্ধে। অশোভন আচরণের এ ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ পিয়নের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ছাত্রীরা।
সর্বশেষ ৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পিয়ন শাহাদত হোসেন জোড় করে কলেজে ঢুকলে ছাত্রীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ছাত্রীদের রোষানলে পড়ে তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে পালিয়ে রক্ষা পান পিয়ন শাহাদত হোসেন। তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি তালাবদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা। পরে অধ্যক্ষের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, পিয়ন শাহাদত হোসেন কলেজে দায়িত্ব পালনের পাশপাশি নৈশপ্রহরি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। দায়িত্ব পালনের সময় কলেজের আবাসিক এক ছাত্রীর সাথে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিষয়টি নিয়ে অন্য ছাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
পরে কলেজ থেকে পিয়ন শাহাদত হোসেনের অপসারণ দাবি করে অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করে কলেজের ছাত্রীরা। বিষয়টি আমলে এনে কলেজ শিক্ষক মায়ারানী চক্রবর্তীকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত কমিটির প্রধান মায়ারানী চক্রবর্তী বলেন, ‘তদন্তে পিয়নের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি প্রমাণিত হয়। তাছাড়া ছাত্রীর ছাথে গড়ে ওঠা সম্পর্কটি নিয়ে তাঁর স্ত্রীও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই পিয়নকে দুই দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলেও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি পিয়ন শাহাদত হোসেন। একারণে তাঁকে ২২ দিনে বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজের কমপেক্ষ ১৫জন ছাত্রী বৃহস্পতিবার অভিযোগ করে বলেন, পিয়ন শাহাদত হোসেন একজন আবাসিক ছাত্রীর সাথে বিশেষ সম্পর্কে জড়ানোর পরও অন্য ছাত্রীদের সাথে অনুরুপ আচরণ করে আসছিলেন। এত অভিযোগের পর অধ্যক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। সর্বশেষ ছাত্রীদের গণস্বাক্ষর নিয়ে পিয়ন শাহাদতের অপসারণ দাবি করেন তারা। গণস্বাক্ষরসহ একটি অভিযোগের কপি অধ্যক্ষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানা পুলিশ, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা।
কলেজের কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, একজন পিয়নের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও অধ্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কলেজের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তবে কেন কী কারণে অধ্যক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, সেটা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে শিক্ষক ও ছাত্রীদের মাঝে।
এব্যাপারে অধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন বৃহস্পতিবার এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নানা ব্যস্ততার কারণে অভিযোগটি আমলে নিতে বিলম্বিত হচ্ছে। তবে পরিচালনা কমিটির সভা ডেকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ছাত্রীর সাথে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলা ও অন্য ছাত্রীদের সাথে ইংগিতপুর্ণ আচরণের অভিযোগ অস্বীকার করে পিয়ন শাহাদত হোসেন বলেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক ও উদ্দেশ্যপূর্ণ এমন অভিযোগ আনা হচ্ছে।’
কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায় বলেন, ‘কলেজের আভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available