রংপুর ব্যুরো: বঙ্গবন্ধুর নয়নের মনি শহীদ শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের ৩টি সরকারি ল্যাপটপ ও কলেজ ফান্ডের টাকায় কেনা একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন আত্মসাতের অভিযোগে অধ্যক্ষ মজিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে রেজুলেশন করেছে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ভবানীপুর ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার সরেজমিনে ভবানীপুর ডিগ্রি কলেজে গিয়ে কলেজের ৫নং রেজুলেশন বহি সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পার্বতীপুরের সভা কক্ষে কলেজের গভর্নিং বডি সদস্যদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সভাপতিত্বে সভায় ৮টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
৮ নম্বর আলোচ্য সূচিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অধ্যক্ষ মো. মবিদুল ইসলাম সাহেব ইস্তফা দিয়ে পূর্বে অন্য কলেজে যোগদানের পূর্বে অত্র কলেজের স্থায়ী ও অস্থায়ী মালামাল বুঝে দেওয়ার সময় কলেজের অর্থায়নে কেনা একটি দামি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল হ্যান্ডসেট (samsung galaxy এম ৩১) এর পরিবর্তে তিনি একটি পুরনো কম দামি মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রদান করেন এবং কলেজের বিভিন্ন মডেলের ২৭টি ল্যাপটপের স্থলে ২৪টি ল্যাপটপ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নিকট জমা দেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিভিন্নভাবে কলেজের প্রকৃত মোবাইল সেট ও বাকি ৩টি ল্যাপটপ lenovo কোরআই থ্রি মডেলের ফেরত দেওয়ার জন্য জানান। কিন্তু তিনি তিনটি ল্যাপটপ ও কলেজ ফান্ডের কেনা মোবাইল হ্যান্ডসেটটি ফেরত দেননি। উল্লেখ্য যে, ল্যাপটপ তিনটি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের। উক্ত মালামাল ফেরত আনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অধ্যক্ষকে দায়িত্ব প্রদান করা হলো’।
কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও নিরিক্ষা কমিটির সদস্যরা জানান, ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কলেজ ফান্ডের ৩৭ হাজার ৯৯৯ টাকা দিয়ে অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি কিনে দেওয়া হয়। যে অধ্যক্ষ সামান্য একটি ফোনের লোভ সামলাতে পারেননি সাথে তিনটি ল্যাপটপও আত্মসাৎ করেছেন। তাহলে তিনি কলেজের কত টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং কি করতে পারেন সেটা এখন সবাই বুঝে গেছে। তবে তার কাছ থেকে ল্যাপটপগুলো ফেরত নিয়ে এসে কলেজের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান তারা।
এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রতাপ রায় বলেন, ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ আমি রিটায়ার্ড করি। ওই সময় অধ্যক্ষ মবিদুল ইসলামের নানান অনিয়ম দুর্নীতি ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের তিনটি ল্যাপটপ এবং কলেজ ফান্ডের টাকায় কেনা একটি মোবাইল ফোন ফেরত না দেওয়া তার বিরুদ্ধে রেজুলেশন করা হয়।
এ ব্যাপারে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেজওয়ানুল হক বলেন, কমিটির সদস্যসহ অনেকবার আমরা অধ্যক্ষ মবিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তিনি তালবাহানা করে দিন পার করেছেন, আজ অবধি তিনি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের ল্যাপটপ তিনটি ও কলেজ ফান্ডের টাকায় কেনা দামি মোবাইল ফোনটি ফেরত দেননি। তবে আবারও ল্যাপটপ ও ফোনটি ফেরত দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মবিদুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ভবানীপুর ডিগ্রি কলেজে আছি, সেখানে অনেক ভালো কাজ করেছি কলেজের উন্নয়নের ক্ষেত্রে। এরপরেও একটি পক্ষ আমার বিপক্ষে লেগেছিল। তবে ইতোপূর্বে কি হয়েছে আমি কি করেছি এগুলো লেখালেখি না করাই ভালো। শিক্ষকদের অনিয়মের কথা পেপার পত্রিকা অনলাইনে প্রকাশি হলে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। তাই এই ধরনের নিউজ না করার জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে ভবানীপুর ডিগ্রি কলেজের সভাপতি ও পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমার বলেন, আমি নতুন এসেছি। তারপরেও কলেজের রেজুলেশনের বিষয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে অবশ্যই একটি সমাধান বের করা হবে বলে তিনি জানান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available