পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার বেড়া উপজেলার সরকারি একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক গৃহবধুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই প্রকল্পের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম শফিক বিরুদ্ধে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় চেয়ারম্যান সালিশের নামে অভিযুক্ত শফিককে জুতাপেটা ও মাত্র এক হাজার টাকার জরিমানা করে মীমাংসা করে দেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী পাবনার বেড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত শফিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী সরদার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা সালেহা খাতুন (ছদ্মনাম)। প্রতিদিনের মতো ৩১ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে সাংসারিক কাজ করছিল। সে সময় স্বামী বাড়িতে না থাকায় ভুক্তভোগী নারীর ঘরে প্রবেশ করে অভিযুক্ত একই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম শফিক। বাড়িতে লোক না থাকার সুযোগে ভুক্তভোগী নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে সে। এসময় ভুক্তভোগী নারীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত শফিক।
এ ঘটনার পর দিন ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার চাকলা ইউনিয়ন পরিষদে সালিশী বৈঠকের ব্যবস্থা করেন স্থানীয় চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী সরদার। ঘটনা ধামাচাপা দিতে সালিশে অভিযুক্তকে জুতাপেটার পাশাপাশি মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানা করে মিমাংসা করা হয়। এসময় ভুক্তভোগীদের মামলা বা কোনো প্রকার ঝামেলা না করতে হুমকি দেন চেয়ারম্যান।
এ ঘটনায় সুষ্ঠ বিচারের দারি ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের।
ভুক্তভোগীর স্বামী আবদুল রাজ্জাক বলেন, মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমার স্ত্রীর ইজ্জতের মূল্য কি এক হাজার টাকা? সেখানে আমাকে অনেক ভয় দেখানো হয়েছে। চেয়ারম্যান বলেছে, তু্ই যদি মামলা-মোকাদ্দমায় যাস তাহলে আমি বলে দেব তুই তোর স্ত্রীকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করাস। এজন্য আমি প্রথমে পুলিশের কাছে যায়নি। আমি আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ ও তামাসার বিচারের বিচার চাই।
অভিযোগ অস্বীকার করে চাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী সরদার বলেন, আমার কাছে উভয় পক্ষ আসলে আমি স্থানীয় মেম্বরদের সহযোগিতায় একটি সালিশী বৈঠক করেছি। সেখানে ধর্ষণের কোনো অভিযোগ ছিল না। তারপরও যেহেতু একজন নারীর ঘরে বিনা অনুমতিতে ঢুকেছিল এজন্য আমরা তাকে (অভিযুক্ত) কানধরে উঠবোস করিয়েছি। কিন্তু কোনো জরিমানা করা হয়নি। যে ১ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে সেটা জরিমানা নয়, ওটা গ্রাম্যপুলিশদের খরচ হিসেবে দেয়া হয়েছে। তখন উভয় পক্ষ আমাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল। এখন তারা মানছে না।
তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল ও আমার প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছে। যেহেতু তারা সিদ্ধান্ত না মেনে আইনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন আইনের মাধ্যমে যা হয় তা হবে। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন।
পরবর্তীতে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠলে ৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাতে অভিযুক্ত শফিককে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর শনিবার রাতে আমরা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম শফিককে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available