কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযানে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। হামলাকারীরা ভাংচুর করেছে পল্লী বিদ্যুতের গাড়ি। ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দিনগত গভীর রাতে উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার কসাইটারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতদের মধ্যে রয়েছেন এমজিএম মো. ফারুক হোসেন, এনফোর্সমেন্ট কো-অর্ডিনেটর (ইসি) সঞ্জয় কুমার ঘোষ, লাইনম্যান মো. আমির হোসাইন, মো. মমিনুল ইসলাম ও গাড়ি চালক মিজানুর রহমান। তাদের হারাগাছ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার মুঠোফোন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ হারাগাছ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজর (ডিজিএম) আরিফুল কবীর মো. সোহেল।
তিনি জানান, মঙ্গলবার দিনগত গভীর রাতে তাদের কাছে সংবাদ আসে উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার কসাইটারী গ্রামে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে গ্যারেজে বেশ কয়েকটি ব্যাটারি চালিত অটোবাইক চার্জ দেওয়া হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাত আড়াইটার দিকে এমজিএম মো. ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের আভিযানিক টিম ওই গ্রামে অভিযান চালিয়ে মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে সোহেল মিয়ার গ্যারেজ ঘরের ভিতরে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ সনাক্ত করে।
আভিযানিক টিম অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য গ্যারেজ ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে গ্যারেজের মালিক সোহেল মিয়া (২৭) তাদের বাধা প্রদান করেন। এক পর্যায়ে সোহেল মিয়া ও তার ভাই মো. সুজন মিয়া (৩০), মো. স্বপন মিয়া (২৫) সহ তারা আরও কয়েকজন একত্রিত হয়ে পল্লী বিদ্যুতের আভিযানিক টিমকে আটক করে চোর চোর বলে চিৎকার করে। স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে সোহেল মিয়া ও তার দুইভাইসহ আরও ৪০-৫০ জন একত্রিত হয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আভিযানিক টিমের সদস্যদের উপর হামলা চালায়।
এ সময় হামলাকারীরা পল্লী বিদ্যুতের গাড়ি ভাংচুর করে এবং টিমের সদস্যদের তিনটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। হামলায় এমজিএম মো. ফারুক হোসেনসহ ১১ জন আহত হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে। তাদেরকে হারাগাছ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে লাইনম্যান মো. আমির হোসাইনের মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতালে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
হারাগাছ জোনাল অফিসের ডিজিএম আরিফুল কবীর মো. সোহেল বলেন, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা তাদের নিয়মিত অভিযান। কসাইটারী গ্রামে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিনগত গভীর রাতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীরা পরিকল্পিতভাবে তাদের লোকজনকে মারধর এবং গাড়ি ভাংচুর করে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে এজিএম বাদী হয়ে হারাগাছ থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
তবে গ্যারেজ মালিক সোহেল মিয়া বলেন, মঙ্গলবার দিনগত রাতে তার গ্যারেজের সামন থেকে একটি মোটর সাইকেল চুরি হয়েছে। তার গ্যারেজের দরজা সব সময় খোলা থাকে। যদি তিনি অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তাহলে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন গ্যারেজের দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করবে। কিন্তু গভীররাতে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন বাড়ির পিছন দিয়ে চলাচল করায় গ্রামের লোকজন চোর ভেবে তাদেরকে মারপিট করে থাকতে পারে।
৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাত ৮টায় মুঠোফোনে রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারিসুল ইসলাম জানান, পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুর ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available