রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের উপরে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে অনেকেই শহীদ হন। সেই শহীদদের স্মরণে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শুরু করে রাতের মধ্যে তা সম্পন্ন করে। সেটিই ছিল আমাদের প্রথম শহীদ মিনার।
যে চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, আজ তা দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভাষাগত অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিকভাবে মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে।
বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে শহীদ মিনার বলতে যারা বাংলা ভাষা আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে যা নির্মাণ করা হয়েছে সেই স্থাপনাগুলোকে বুঝায়। সারাদেশের স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই শহীদ মিনার আছে। কিন্তু কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর ও রৌমারী উপজেলায় মোট ১৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও মাত্র কয়েকটি বিদ্যালয়ে আছে শহীদ মিনার।
শহীদ মিনার না থাকার কারণে বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলো পালনে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার, যার ফলে ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ২১ ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য সম্পর্কে জানানোর জন্য ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে যেতে হয় উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। শহীদ মিনার নেই এমন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকে সাথে কথা হলে তারা জানান, আমাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার না থাকার কারণে কচিকাচা শিক্ষার্থীদের ২১ ফেব্রুয়ারিসহ জাতীয় দিবস পালনে সমস্যায় পড়তে হয়। যদি প্রতিটা বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকে তাহলে আমাদের পায়ে হেঁটে কচিকাচা শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপজেলা শহরে যেতে হবে না।
এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, যে সকল বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, সেইসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার করার ব্যবস্থা করা হবে।
রাজীবপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, প্রতিটা বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সরকারি কোনো বাজেট না থাকার কারণে শহীদ মিনার করতে হিমশিম খাচ্ছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available