কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় আলোচিত মিলন হোসেন হত্যা মামলার মূল হোতা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সজীব শেখ ও ইফতিকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়েছে। রিমান্ডে মিলনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন সজীব ও ইফতি।
১১ ফেব্রুয়ারি রোববার তিন দিনের রিমান্ড শেষে দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজির করে পুলিশ। বিকেলের দিকে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন কুষ্টিয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা।
রিমান্ডে নেওয়া আসামি সজীব শেখ (২৪) কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি এবং ইফতি খান হাউজিং সি ব্লক ২৫৩ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা আওলাদ খানের ছেলে। সজীব শেখ কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধান। শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার কারণে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় সজীবকে।
এরপর তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সজীব ও ইফতি মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাজু মোহন সাহা বলেন, এ পর্যন্ত মিলন হত্যাকাণ্ডে ছয় আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারি মিলন হত্যা মামলায় গ্রেফতার সজীব ও ইফতির বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। তাদের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়েছে। রিমান্ডের মিলনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন সজীব ও ইফতি।
৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানার আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে কুমারগাড়া এলাকার ফয়সাল আহমেদ (২৫), দেশওয়ালীপাড়ার কাজী লিংকন (৩২), সদর উপজেলার কান্তিনগর গ্রামের জনি প্রামাণিক (২১) ও ডি ব্লকের সজল ইসলাম (১৮)। তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
এর আগে, ৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া থানায় অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহত মিলনের মা শেফালী খাতুন।
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, এস কে সজীবের নাম সজীব শেখ। কুষ্টিয়া আড়ুয়াপাড়ার এক সময়ের মাদক ব্যবসায়ী মিলন শেখ ওরফে ডাল মিলনের ছেলে। আড়ুয়াপাড়া এলাকার হরিবাসর এলাকায় তাদের বাড়ি। সজীবের নামে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মাদক, চাঁদাবাজি, হামলাসহ নানা অভিযোগে পুরোনো ৭টি মামলা রয়েছে। হাউজিং এলাকায় তাদের একটি কার্যালয় আছে। সেখানে দীর্ঘদিন লোকজনকে ধরে এনে নির্যাতন করে চাঁদা আদায় করে আসছিল এ চক্রটি। মিলনের
উল্লেখ্য, কিশোর গ্যাং গ্রুপের সন্ত্রাসীদের দাবি করা চাঁদা না দেওয়ার কারণে ৩১ জানুয়ারি সকালে হাউজিং এলাকার সজল মিলনকে মোবাইলে কল করে ডেকে সজীবের নেতৃত্বেই মিলনকে হত্যা করার আগে হাউসিং এলাকার একটি বাড়িতে আটকে রেখে তাকে নির্যাতন করা হয়। এরপর মরদেহ গুম করার উদ্দেশে হেসকা ব্লেড এবং সুপারি কাটা জাতি দিয়ে ৯ টুকরো করা হয়। এ ঘটনা তিনদিন পর শনিবার ৩ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় পদ্মা নদীর চরের চার স্থান থেকে মিলনের ৯টুকরো মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত মিলন হোসেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পূর্ব বাহির মাদি এলাকার মাওলা বক্সের ছেলে। তিনি আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতেন। গত ১০ মাস আগে বিয়ে করেন। স্ত্রী মিমিকে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available