মোহাম্মদ শফিক, জেলা প্রতিনিধি (কক্সবাজার) : কক্সবাজার উপকূলবর্তী বঙ্গোপসাগরে চারটি মাছ ধরার ট্রলারে জলদস্যুরা হানা দিয়েছে। এ সময় বাধা দেয়ায় চার জেলেকে সাগরে নিক্ষেপ করেছে রোহিঙ্গা জলদস্যুরা। এখনও তাদের সন্ধান মেলেনি।
ধারণা করা হচ্ছে, এই চার জেলের সলিল সমাধি ঘটেছে। ফিশিং বোট মালিক সমিতির নেতারা দাবি করেছেন, জলদস্যুদের মধ্যে অনেকেই রোহিঙ্গা নাগরিক ছিল।
১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার মধ্যরাতে কক্সবাজার উপকূলবর্তী সাগরের ১৪ বিউ নামক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন- অলি আহমদ, মো. আনিস, মো. জিয়া ও দেলোয়ার হোসেন। তারা সবাই এফবি হাসান ট্রলারের জেলে।
ট্রলার মালিকদের বরাতে বোট মালিক সমিতির নেতা আতিকুর রহমান বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের অন্তত ১০/১৫ কিলোমিটার দূরত্বের ১৪ বিউ নামক এলাকায় এফবি হাসান নামের একটি ট্রলারে করে মাছ ধরছিলেন জেলেরা। এ সময় অন্য একটি ট্রলারে করে ২০/২৫ জনের একটি সশস্ত্র দল ট্রলারে হামলা করে লুটপাট চালায়। কথাবার্তায় বোঝা গেছে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা ভাষায় কথা বলেছে। ওই ট্রলারটির মালিক সদর উপজেলার খুরুশকূলের মো. জাকারিয়া।
আতিকুর রহমান বলেন, এসময় বাধা দিলে এফবি হাসানে থাকা ১৯ জেলেকে মারধর ও চারজনকে সাগরের পানিতে ফেলে দেয় জলদস্যুরা। পরে এফবি হাসানের ইঞ্জিন বিকল করে দিয়ে মাছ ও জালসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায় তারা। এরপর জলদস্যুরা ঘটনাস্থলের কিছু দূরে মাছ ধরার আরও তিনটি ট্রলারে ডাকাতি করে। ওই ট্রলারগুলো থেকেও মাছ ও জালসহ অন্যান্য মালামাল লুটের পর ইঞ্জিন বিকল করে নিরাপদ দূরত্বে চলে যায় জলদস্যুরা।
দেলোয়ার নামের এক ফিশিংবোট মালিক জানান, ঘটনার পর থেকে সাগরে ফেলে দেওয়া চার জেলে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া অন্য ট্রলারের সহায়তায় এফবি হাসানকে কক্সবাজার উপকূলে নিয়ে আসা হয়। এখনও সাগরে ভাসছে ডাকাতির শিকার অন্য তিনটি ট্রলার। সাগরে নিক্ষেপ করা চার জেলের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানা যায়নি।
শনিবার সকালে বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী এফবি হাসানের মালিক মো. জাকারিয়া। তবে ঘটনাস্থল নিজেদের আওতাধীন এলাকা নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম ও উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে কথা হলে ঘটনাস্থল তাদের আওতাধীন নয় বলে জানিয়েছেন।
পরে টেকনাফ বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান বলেন, টেকনাফের শামলাপুর উপকূলবর্তী সাগরে মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতির ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ অবহিত নয়। তবে ঘটনার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। ভাসমান তিনটি ট্রলারে ৫০/৬০ জন জেলে রয়েছে। তারা এখনও তীরে ফিরে আসেনি। তারা ফিরে এলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান ফিশিং বোট মালিক সমিতির নেতারা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available