ফকির মিরাজ আলী শেখ, স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের মুনিরকান্দি গ্রামের শাজাহান শেখের ছেলে মিরাজুল শেখ (২৪) দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় গিয়ে প্রায় ৩ মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। শুধু মিরাজুল শেখ নয় একাধিক পরিবারের সন্তানকে ইতালি পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়াতে আটকে রেখে কোটি টাকার ওপরে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ গোহালা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ ও মোল্লাদি গ্রামের গিয়াস উদ্দিন মোল্লার ছেলে রুহুল আমিন মোল্লাসহ এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় আবুল কালাম আজাদ ও রুহুল আমিন মোল্লার বিরুদ্ধে মানব পাচার দমন আইনে গোপালগঞ্জ আদালতে মামলা করে নিখোঁজ মিরাজুল শেখের বাবা শাজাহান শেখ। এর আগে মুকসুদপুর উপজেলার সিন্ধিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করলে আবুল কালাম আজাদের সহযোগী রুহুল আমিন মোল্লাকে ফাঁড়িতে ডেকে নাম মাত্র সালিস করে। পরে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে তাকে ছেড়ে দেয় ফাঁড়ির আইসি শওকত হোসেন।
নিখোঁজ মিরাজুল শেখের মা রেবেকা বেগম বলেন, আমার ছেলে মিরাজুলকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে আবুল কালাম আজাদ ও রুহুল আমিন মোল্লা ১২ লক্ষ টাকা নেয়। পরে মাফিয়াদের দিয়ে ধরিয়ে আরও ৭ লক্ষ টাকা ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে নেয়। মাফিয়াদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়ার পর আমার ছেলে তিন মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছে। আমার ছেলে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে সে খবরও আমরা পাচ্ছি না। আমি আমার ছেলেকে জীবিত ফেরৎ পেতে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মিরাজুলের বোন খাদিজা আক্তার বলেন, আমার ভাইকে লিবিয়া নিয়ে মাফিয়াদের কাছে তুলে দিয়ে তাকে মারপিট করে ভিডিও আমাদের কাছে দিয়ে টাকা দাবি করে। ভাইকে বাঁচানোর জন্য টাকা দেওয়ার পরে এখনও তিন মাস ধরে আমার ভাই নিখোঁজ রয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট আমার ভাইকে ফেরৎ চাই ও দালালদের কঠিন বিচার দাবি করছি।
এবিষয়ে গোহালা ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মাতুব্বর গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, উন্নত জীবনের মিথ্যা প্রলোভনে মানুষকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর নামে জিম্মি করে যারা মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করে সর্বস্বান্ত করছে, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
মুকসুদপুর থানার ওসি (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল বলেন, এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে মুকসুদপুর থানায় মানব পাচার দমন আইনে একটি মামলা রুজু হয়েছে। আবুল কালাম আজাদকে গ্রেফতার করে আদালতে মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সাথে জড়িত থাকা ও টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। অপর আসামি রুহুল আমিন মোল্লাকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে। ভিকটিম মিরাজুল শেখ এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available