মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের মনিরামপুরে হরিনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজা শেষে স্থানীয় ইউপি সদস্য দীপক কুমার রায়ের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় এক নারীসহ অন্তত ১২ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে স্কুল সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে ঈগলের ব্যানার চুরি হয়। ওই স্কুলে সরস্বতী পূজা শেষে ব্যানার চুরির ঘটনা নিয়ে নৌকা ও ঈগলের কর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ঈগলের অন্তত এক নারী কর্মীসহ ১১ জন নেতা-কর্মী আহত হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে, এলাকায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
আহতরা হলেন গোবিন্দ রায়ের ছেলে জয়ন্ত কুমার রায় (৩০), বলনাথ রায়ের ছেলে পবিত্র রায় (৩৫), আনন্দ বিশ্বাসের স্ত্রী অর্চনা রায় (৫০), হরেন বিশ্বাসের পুত্র দেবব্রত বিশ্বাস (২৮), লক্ষীকান্ত রায়ের ছেলে মাধব রায় (৫৫), মিলন রায়ের ছেলে সুজায় রায় (২০), বাসুদেব বিশ্বাসের ছেলে সম্রাট বিশ্বাস (২৮), জগেন্ত্র নাথ রায়ের ছেলে সঞ্জিত রায় (৪২), ধীরেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে সাধন রায় (৩৭) তার ভাই যাদব রায় (৩৫), বাসুদেব বিশ্বাসের পুত্র মেঘনাথ বিশ্বাস (৩৫) ও স্থানীয় নিতাই চন্দ্র রায়ের ছেলে দীপক কুমার রায়।
জানা যায়, হরিনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে অনেক দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এক পক্ষের দাবি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়। ওই সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য দীপক রায়ের প্যানেল ছাড়া অন্যদের মনোনয়ন কিনতে বাধা দেওয়া হয়। এতে একতরফাভাবে ইউপি সদস্য বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ নিয়ে স্থানীয়রা আদালতে মামলা ঠুকে দেয়। মনোনয়ন ক্রয়ে বঞ্চিতরা জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেয়।
ঘটনার দিন ওই বিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্কুল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের নিমন্ত্রণ করে। অনুষ্ঠানে নৌকা ও ঈগলের কর্মীরা অংশ নেয়।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সঞ্জিত রায় অভিযোগ করেন, অনুষ্ঠানে ঈগলের কর্মীদের নিমন্ত্রণ করা নিয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য দীপক রায় কটুক্তি করেন। পরে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা-অর্চনার কাজ শেষে খাওয়া-দাওয়া হয়।
স্থানীয় জয়ন্ত রায় বলেন, স্কুল সংলগ্ন হরিনা বাজারের কংকর বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তির চায়ের দোকানে ঈগলের ব্যানার ছিল। সম্প্রতি ব্যানারটি চুরি হয়। এ নিয়ে নৌকা ও ঈগল কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, এসব ঘটনা নিয়ে সরস্বতী পূজার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে উভয় পক্ষের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এক পর্যায়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য দীপক রায়ের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে নৌকার এক কর্মীসহ ঈগলের ১১ নেতাকর্মী আহত হন। আহতের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির কান্তি রায় বলেন, সরস্বতী পূজা নিয়ে সংঘর্ষ হয়নি। মূলত ঈগলের ব্যানার চুরি নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
থানার ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিয়োগ হয়নি। অভিযোগ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে, এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available