• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৯:৫১:২৩ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০৯:৫১:২৩ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থাভাবে অনিশ্চিত নড়াইলের মেয়ে শান্তার পড়াশোনা

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সকাল ০৮:৫৭:১১

মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থাভাবে অনিশ্চিত নড়াইলের মেয়ে শান্তার পড়াশোনা

নড়াইল প্রতিনিধি: চরম দারিদ্রতা ও প্রতিকূলতাকে চ্যালেঞ্জ করে মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে শান্তা সেন। তবে অর্থাভাবে তার ভর্তি ও পড়াশুনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

নড়াইল সদর উপজেলার বড় মিতনা গ্রামের দিনমজুর শিবুপদ সেন ও গৃহিনী শিবানী সেনের একমাত্র মেয়ে শান্তা। নিভৃত পল্লীর অত্যন্ত দরিদ্র ঘরে জন্ম নেয়া শান্তা সেন ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি খুবই মনোযোগী।

শান্তা প্রাথমিক সম্পন্ন করেছে বড় মিতনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। চাঁচড়া নফেল উদ্দিন বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাস করেছে। নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিজ্ঞান শাখায় এইচএসসি পাস করেছে। প্রত্যেকটি পরীক্ষাতে সে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। সর্বশেষ ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে শান্তা পাবনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। দুধ বিক্রির টাকা এবং বিভিন্ন সমিতি (এনজিও) হতে নেয়া ঋণের টাকায় চলছিল তার এতো দিনের পড়ালেখার খরচ। কিন্তু মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে খরচ চালানোর মতো কোনো ব্যবস্থা করাই সম্ভব নয় তার পরিবারের পক্ষে।

১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে তাদের বাড়িতে গেলে সে  জানায়, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করার কথা মাথায় আসে। বাবা গরিব হওয়ায় প্রাইভেট পড়ার সুযোগ হয়নি। হাই স্কুলে পড়াকালে মিতনা গ্রামের দেবাশীষ বিশ্বাস তাকে মাঝে মধ্যে একটু দেখিয়ে দিতেন। তিনি তাকে ভালো করে পড়ার জন্য উৎসাহ দিতেন। চাঁচড়া নফেল উদ্দিন বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পুণ্ডরিক বিশ্বাস তাকে পড়াশুনার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করতেন। এরপর নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়াকালে পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক আরিফুল ইসলামের অনুপ্রেরণায় পড়াশোনার গতি আরও বাড়ে। অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলেই চলে নিজেকে তৈরি করার অবিরাম প্রচেষ্টা।

মেডিকেল ভর্তির ফলাফল জানার পরেই বোঝা গেছে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মন্ডলির সহযোগিতা, বাবা-মায়ের হাড়ভাঙ্গা খাটুনির টাকা, আর নিজের পরিশ্রম কাজে লেগেছে। এখন একটাই স্বপ্ন, ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করে মানুষকে সেবা দেয়া।

শান্তার মা শিবানী সেন বলেন, গ্রামের বিভিন্ন লোকের বাড়ি থেকে দুধ জোগাড় করে শহরে নিয়ে বিক্রি করেন তিনি। এ কাজ করে যা আয় হয়, তাদিয়ে মেয়েকে পড়াশোনা করান। মেয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় তিনি বেজায় খুশি। তবে তার ভর্তি ও পড়াশোনার ব্যয়ভার কীভাবে বহন করবেন, এ নিয়ে খুবই চিন্তিত বলে তিনি জানান।

শান্তার বাবা শিবুপদ সেন বলেন, তাদের বসত ভিটা ছাড়া খুব সামান্য জমি ছিল। ছেলে সমিরন সেন ও মেয়ে শান্তা সেনকে পড়াতে গিয়ে জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। আর যা সামান্য জমি ছিল, তা-ও বন্ধক দিয়েছেন। নিজে দিনমজুরি করেন। আর স্ত্রী দুধ বিক্রি করেন। তাদের সামান্য আয়ে সন্তানদের পড়াশোনা এবং অন্যান্য খরচ চালাতে গিয়ে ইতোমধ্যে অনেক দেনা হয়ে গেছেন। ছেলে সমিরন গণিত বিষয়ে অনার্স পড়ে। আর মেয়ে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। তাদের পড়াশোনা শেষ হলে হয়তো দেনা পরিশোধ হতে পারবেন। বন্ধক দেয়া জমিটুকু ছাড়িয়ে নিয়ে চাষাবাদ করতে পারবেন। এমন আশাবাদ ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, মেয়েকে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় টাকার জোগাড় করতে পারেননি। এরপর প্রতিমাসের টাকা কীভাবে দিবেন? সেই চিন্তায় এখন দিশেহারা অবস্থা।

কারো সহযোগিতা পেলে নিবেন কি-না? এমন প্রশ্নের উত্তরে পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, কে দেবে সাহায্য? কার কাছে যাবো? আমি তো লেখাপড়া মোটেই জানি না। গরিব মানুষ। কেউ তো আমার কথা শুনতেও চাইবে না। আপনারা যদি একটু কাউকে বলে ব্যবস্থা করে দিতে পারতেন! 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ






ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু
২১ নভেম্বর ২০২৪ রাত ০৮:০৫:৩৩