মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের মনিরামপুরে আবারও আলোচনায় সেই ধনাঢ্য কাপড় ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন। তিনি গেলো বছর ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে সরকারি জমি দখলে নিয়ে পাকা দোকান ঘর স্থাপন করেন। এটিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট গোলযোগে থানার আবু বক্কার নামের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পৃথক দুই মামলায় মনিরামপুর দুই ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫, ২০ জনের নামে মামলা হয়েছে।
জানা যায়, গেলো বছর পৌরশহরের কাপুড়িয়া পট্টিতে ধনাঢ্য কাপড় ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন প্রায় দুই শতক জমি ডিসিআর নেন। সেখানে পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করেন। কিন্তু মোশাররফের দোকান ঘরের সম্মুখভাগে গার্মেন্টস ব্যবসা করে আসছিলেন পৌর এলাকার কামালপুর গ্রামে ছেলে মোজাফ্ফর হোসেন। এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর খুপরি ঘর তুলে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেন মোশাররফ হোসেন। ওই সময় মোশারফফের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের দিয়ে মোজাফ্ফরের খুপরি ঘর বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠে। এরপর ঘর সরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। খুপরি ঘর সরাতে ব্যর্থ হন। ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি দোকান হতে বাড়ি যাবার পথে নিখোঁজ হন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর হোসেন। নিখোঁজের নেপথ্যে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মোশাররফকে দায়ী করেন তার স্বজনরা।
এ নিয়ে মোজাফ্ফরের স্ত্রী খাদিজা খাতুন বাদি হয়ে ব্যবসায়ী মোশাররফের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মোজাফ্ফরকে উদ্ধারে আন্দোলনে নামেন ব্যবসায়ীরা। নিখোঁজের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ দেশব্যাপী তোড়পাড়ের সৃষ্টি হলে পুলিশ মোজাফ্ফরকে উদ্ধার করে।
খাদিজা খাতুন জানান, উদ্ধার ঘটনায় নানা নাটকীয়তাসহ তাদেরকে কোন ব্যাপারে মুখ না খুলতে হুমকি প্রদান করা হয়। তিনি আরও জানান, তার স্বামীকে ওই জায়গায় ব্যবসার সুযোগ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে মোশাররফের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগ প্রত্যাহারে চাপ দেয়া হয়। সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনের পর নিজের জায়গায় ব্যবসা করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ নানা মহলে আকুতি জানান মোজাফ্ফর। ঘটনার দিন মোজাফ্ফরসহ তার স্বজন ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে নিয়ে হারানো জায়গায় দোকান ঘর নির্মাণ করতে থাকেন। এতে বাধা দেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন। এ নিয়ে গোলযোগের সৃষ্টি হলে ঘটনাস্থলে আসেন এসআই আবু বক্কার। এ সময় তিনি হামলার শিকার হন বলে তিনি দাবি করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল হতে আটক হন মোজাফ্ফর হোসেন, তার জামাই শাহ আলম ও বোনজামাই (ভগ্নিপতি) শরিফুল ইসলাম।
মোশাররফ হোসেন বলেন, তার উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। পরে এসআই আবু বক্কারকে ফোন দেন তিনি। পরদিন শনিবার এসআই আবু বক্কার বাদি হয়ে আটক তিন জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫, ২০ জন এবং মোশাররফ হোসেন বাদি আটক তিনজনসহ কাউন্সিলর আদম আলী ও বাবুল আক্তারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫, ২০ জনের নামে থানায় মামলা হয়। যার মামলা নম্বর যথাক্রমে ২৮ ও ২৯।
মনিরামপুর থানার ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, এ ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available