সেনবাগ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার অর্জুনতলা ইউপির ইদিলপুর গ্রামে ঘরে ঢুকে সাবেক স্ত্রী, কন্যা ও শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা মামলার প্রধান অভিযুক্ত আমির হোসনে (৫০)কে গ্রেফতার করেছে সেনবাগ থানা পুলিশ।
২১ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেলে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. ওমর ফারুক মিয়া ও এএসআই মো. আশরাফুল ইসলাম দিপুর নেতৃত্বে পুলিশ চট্টগ্রামের শহরের চাক্তাই এলাকার হোটেল আল-সিরাজের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই হোটেলের দ্বিতীয় তলায় রাখা অসামির ব্যবহৃত ব্যাগ তল্লাশি করে কাপড় মোড়ানো হামলায় ব্যবহৃত ধারালো দা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়।
২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার আসামি আমির হোসনকে নোয়াখালী বিচারিক আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে ওই মামলার ২নং আসামি ভিকটিমের ভাসুর বেলালকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে সেনবাগ থানা পুলিশ।
গ্রেফতার আমির হোসেন (৫০) ও বেলাল (৫৫) পার্শ্ববর্তী সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর গ্রামের এতিম আলী জমাদার বাড়ির সফি উল্লাহ ছেলে।
ওই হামলার ঘটনাটি ঘটে ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত দু'জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে সোনাইমুড়ীর উপজেলার অম্বরনগর গ্রামের আমির হোসেনর সাথে সেনবাগের ইদিলপুর গ্রামের ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয়। সংসারে কলহ দেখা দিলে তিন বছর আগে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর ফাতেমা দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ির পাশে ইদিলপুর গ্রামে নতুন বাড়ি করে বসবাস শুরু করেন।
১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে আমির হোসেন তার সহযোগীকে নিয়ে সাবেক স্ত্রী ফাতেমার মুরগির ঘর ও বসতঘরের টিন কুপিয়ে তছনছ করে। এ সময় টিনের শব্দ শুনে ফাতেমা ও তার মেয়ে দরজা খোলা মাত্রই আমির হোসেন ধারালো দা ও ছোরা নিয়ে ঘরে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে সাবেক স্ত্রী ফাতেমা, তার মেয়ে রাবেয়া এবং শাশুড়ি মাফিয়া বেগমকে হত্যার চেষ্টা চালায়।
এসময় তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মুমূর্ষু অবস্থায় মাফিয়া বেগম ও তার মেয়ে ফাতেমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের দু'জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হামলা, ভাংচুর ও হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে ফাতেমা বেগমের ভাই আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আমির হোসেনকে ১ নম্বর ও তার বড় ভাই বেলালকে ২ নম্বর আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
আহতরা হলেন, অর্জুনতলা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইদিলপুর গ্রামের ছমদ আলী হাজ্বী বাড়ির লোকমান হোসেনের স্ত্রী মাফিয়া বেগম (৬০), তার মেয়ে ফাতেমা বেগম (৩৮) ও নাতনী রাবেয়া আক্তার (১৮)।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তারা অভিযান চালিয়ে মামলার দুই আসামিকেই গ্রেফতার করেছেন। আসামিদের নোয়াখালী বিচারিক আদালতের প্রেরণ করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available