জুনায়েদ আহম্মেদ, লক্ষ্মীপুর: দখল-দূষণের কবলে পড়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে লক্ষ্মীপুর জেলা দিয়ে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী রহমতখালী খাল। স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে দখল করে নিয়েছে খালটির দু-পাশ। আর পৌর বাজার এলাকাসহ জেলা শহরের বিভিন্ন ডাস্টবিনে ময়লা-আবর্জনা ও পলিথিন ফেলায় তা এসে পড়ছে রহমতখালী খালটিতে। খালের অধিকাংশই দখল আর দুষণের কবলে, কিছু অংশে পলি জমে কচুরীপানায় ডাকা পড়েছে খালটি।
এতে বন্ধ হয়ে পড়েছে খালের স্বাভাবিক পানির প্রবাহ, ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রহমতখালী খালের পানি। ফলে নষ্ট হচ্ছে জীব-বৈচিত্র্য, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলরা বলছেন, খালটি জেলা প্রশাসকের আওতায়। আর জেলা প্রশাসন বলছে, শিগগিরিই দখলদারদের তালিকা করে চালানো হবে উচ্ছেদ অভিযান।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ, মান্দারি, জকসিন ও পৌর শহরের বাজার এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গেছে রহমতখালী খাল। এক সময় এই রহমতখালী খাল ছিল খরস্রোতা। এ খাল দিয়ে ভোলা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লক্ষ্মীপুরে পণ্য সামগ্রী নিয়ে বড় বড় নৌকায় আসা-যাওয়া করতেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু দখল এবং দূষণের কবলে পড়ে খালটি এখন প্রায় মৃত।
এদিকে, জেলা শহর এবং শহরের বাহিরের বাজারগুলো থেকে এ খালে ফেলা হচ্ছে বাজারের উচ্ছিষ্ট ও প্লাস্টিক বর্জ্য। বাসা-বাড়ির মানবসৃষ্ট বর্জ্যও পড়ছে এ খালে। এতে খালের পানি পঁচে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য। খালটি দখল ও দূষণমুক্ত রাখতে এ যাবৎ নেওয়া হয়নি দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় খালের দূষণ দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া রহমতখালী খালটির দৈর্ঘ্য ৪০ কিলোমিটার। এর মধ্যে সদর উপজেলার অংশে পড়েছে ১৮ কিলোমিটার। অবৈধ দখল ও দূষণের কবলে পড়ে পৌর শহর অংশে খালটির দৈর্ঘ্য এখন দাঁড়িয়েছে ৮ থেকে ১০ মিটারে।
স্থানীয়রা জানান, দখল ও দূষণের কবলে পড়ে এ খালের পানি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এক সময়ের খরস্রোতা এই রহমতখালী খালটি অবৈধ দখল ও দূষণমুক্ত করা গেলে ঐতিহ্য ফিরে পেত খালটি।
খাল দূষণের কথা স্বীকার করে লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া জানান, খালপাড়ের বাসিন্দাদের অসচেতনতায় খাল দূষণ হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলেই খালটি অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদার ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পদ্মাসন সিংহ বলেন, রহমতখালী খালটিকে বাঁচাতে দখলদারদের তালিকা করে শিগগিরিই চালানো হবে উচ্ছেদ অভিযান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available