ফতুল্লা (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সিগারেট খাওয়ার প্রতিবাদ করায় সালমান নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় এ হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায় স্থানীয় এক ইউপি সদস্য। ওই ইউপি সদস্য ও কথিত কিশোর গ্যাং লিডার রায়হানের হুমকি-ধামকিতে নিহতের পরিবার ভয়ে গোপনে মরদেহ দাফনের চেষ্টা করেন।
এসময় খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ২৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুরে ফতুল্লার কুতুবপুর ক্যানেলপাড় এলাকায় এঘটনা ঘটে।
নিহত সালমান (১৭) খুলনা জেলার শাহারাবাদ থানার জিনারতলা গ্রামের ভ্যান চালক মোফাজ্জল মিয়া ও খুকু বেগমের ছেলে।
তারা স্বপরিবারে ফতুল্লার কুতুবপুর চিতাশাল কুসুমবাগ এলাকার ২নং গলির শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
নিহতের মা খুকু বেগম বলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ক্যানেলপাড় এলাকায় সাদ্দাম মিয়ার চায়ের দোকানের সামনে সালমান দাঁড়িয়ে ছিলো। তখন জাহিদ নামে এক ছেলে সিগারেট ধরায়। এতে সালমান তাকে দূরে গিয়ে সিগারেট খেতে বলে।
এজন্য দলবল নিয়ে এসে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে সালমানকে এলোপাথারি মারধর করে জাহিদ। এরপর সালমান সেখান থেকে আহত অবস্থায় কোনমতে বাসায় এসে পড়ে যায়। রাত ৪টায় অবস্থা খারাপ হওয়ায় দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পথে সালমান মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, কী করবো চিন্তা ভাবনা করার জন্য ছেলের মরদেহ নিয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বাসায় অপেক্ষা করছিলাম। তখন সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে স্থানীয় জামান মেম্বার আমাদের বাসায় এসে বলেন তোমাদের ছেলে নেশাপানি করে মারাগেছে। এ বিষয় নিয়ে থানা পুলিশ করলে মরদেহটা পুলিশ নিয়ে যাবে এবং ময়না তদন্তের জন্য কাটাছেড়া করবে। ছেলে মারাগেছে সে আর ফিরে আসবেনা মরদেহটা দাফন করে ফেলো। পরে যাদের সাথে মারামারি হইছে তাদের ডেকে মীমাংসা করে দিবো।
যখন মেম্বার এসব কথা বলেছে তখন তাকে আমি চিনতে পারিনি। পরে স্থানীয় লোকজন বলছে, সে আমাদের এলাকার জামান মেম্বার। তখন আমার স্বামী কয়েকজনের কাছ থেকে দাফন কাফনের টাকা তুলে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করেন। এসময় পুলিশ এসে মরদেহ নিয়ে যায়।
এবিষয়ে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য জামান বলেন, এক ছেলে ফোন করে জানিয়েছে ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে ক্যানেলপাড় সাদ্দাম মিয়ার চায়ের দোকানের সামনে পোলাপান ঝগড়া করেছে। এতে মারধরে একজন মারাগেছে। এরপর বিষয়টি নিয়ে নিহত ছেলের বাবার সাথে ফোনে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তখন নিহতের বাবাকে বলেছি আপনে ইচ্ছে করলে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করতে পারেন, আমি সহযোগিতা করবো। আর যদি তা না চান তাহলে মামলা করতে পারেন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলিনি আর তাদের বাসায়ও যাইনি, থানা পুলিশকেও সংবাদ দেইনি।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আজম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available