হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি: জনবল সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও পূর্বের সুযোগ-সুবিধাই পাচ্ছে না বলছেন রোগীরা। পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় প্রয়োজনীয় সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ রোগীদের।
রোগী ও স্বজনরা বলছেন, আল্ট্রাস্নোগ্রাফি থেকে শুরু করে এক্স-রে করার সেবা মেলে না ৫০ সজ্জা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটিতে। ফলে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বাইরে থেকে এসব করাতে হয়। ডিজিটাল এক্সরে মেশিন থাকলেও তা পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে অপারেটর না থাকায়। এছাড়াও কাজে লাগছে না অ্যাম্বুলেন্স সেবা। অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা প্রদানসহ আউট ডোর সেবায় নেই পর্যাপ্ত লোকবল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১১ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পঞ্চাশ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে ১৯ জন চিকিৎসক থাকার কথা হাসপাতালটিতে। তবে বর্তমানে ৫ জন চিকিৎসক দিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা। ২৫ জন নার্সের বিপরীতে ১৪ জন নার্স আছেন হাসপাতালটিতে। এছাড়া হাসপাতালটিতে ৫ জন ক্লিনার থাকার কথা থাকলেও সেখানে নেই কোন জনবল। এক্স-রে অপারেটরসহ প্রতিটি সেক্টরে জনবল সংকটে এক প্রকার নাজুক অবস্থায় পতিত হয়েছে হাসপাতালটি।এতে তিস্তা বেষ্টিত উপজেলাটির ৯টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার ব্যাহত হওয়ায় প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে বা দূরে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়ছেন বিশাল এই জনগোষ্ঠী। ফলে দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে হাসপাতালটির সকল সংকট নিরসনের দাবি স্থানীয়দের।
শিশু চিকিৎসাসেবা নিতে আসা দক্ষিণ গড্ডিমারী এলাকার মোসলেহা বেগম বলেন, ‘আমার ৬ মাস বয়সী সন্তানের চিকিৎসা নিতে এসে শিশু বিশেষজ্ঞ শাহানা আফরিনের দেখা পাইনি। পরে জরুরি বিভাগের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যাচ্ছি।’
সিঙ্গীমারী থেকে আসা সিরাজুল নামে একজন বলেন, ‘হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপারেশন থিয়েটার, এক্স-রে মেশিন, ইসিজি, আল্ট্রাস্নোগ্রাম সহ সব ধরনের ব্যবস্থা থাকলেও টেকনিশিয়ানের অভাবে এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে সংকট নিরসনের দাবি জানান তিনি।’
আসমা বেগম নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘হাসপাতালের চারিদিকে ময়লা। ১০ বার ডাকলেও কোনো নার্স না আইসে। ডাক্তার তো ওই সকালে আইসে আর নাই৷এটে চিকিৎসা করির আইসা বেকার।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনবল সংকটের কথা শিকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ হাসানুল জাহিদ বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জনবল চাহিদা পাঠানো হয়েছে এবং যোগাযোগ অব্যাহত আছে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available