মোহাম্মদ শফিক, কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বর্তমান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত জসিম উদ্দীন খুটাখালী ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আলী হোছনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা রয়েছে। উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের বহলতলী চিংড়ি জোনে সংঘঠিত এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগীদের পরিবার।
২২ ফেব্রুয়ারি বুধবার দুপুরে কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘটনা তুলে ধরেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ হাসান ফারুক। তিনি চকরিয়ার খুটাখালী ৮নং ওয়ার্ডের ফুলছড়ি মাদরাসা পাড়ার বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চকরিয়া উপজেলার সাবেক কমান্ডার মরহুম আলহাজ্ব ফরিদ আহমদের ছেলে। পেশায় ব্যাংকার।
সংবাদ সম্মেলনে হাসান ফারুক বলেন, ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর আমার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ফরিদ আহমদ মারা যান। পিতার সম্পদের অংশীদার হিসেবে বিএস খতিয়ান নং-৫০০, ৫০১, ৫৬৭, ৩৫৯, ৪২৯, ৪৬৪/১, ৩৯৮, ৪০০, ৪০১, ৪০২, ৪০৩, ৪৫২ এই ১১টি খতিয়ানের প্রায় ২০ একর জায়গা ভোগ দখলীয় মালিক আমরা। আমাদের পক্ষে সম্পদের দেখভাল করেন চাচা জাফর আহমদ।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি খতিয়ানভুক্ত জমি জবরদখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে ১৫/২০ জনের সন্ত্রাসী-দখলবাজচক্র।
এক সময়ের বিএনপির ক্যাডার বর্তমান নব্য ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম উদ্দীন এই দখলবাজিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের।
ইতোমধ্যে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ আহমদের ছোট ভাই জাফর আহমদ। এ মামলায় বারিত আদেশসহ ১৪৪ ধারা জারি করেন আদালত। কিন্তু আদালতের আদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জমি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে চিহ্নিত দখলবাজরা। তাদের ৪০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার একটি অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের হাত সংরক্ষিত রয়েছে ও আরেকটি রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ আহমদের পরিবারের পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বক্তব্য রাখেন।
তিনি আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহারকারী ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করেন এবং অসহায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষে থাকার ঘোষণা দেন।
এসময় মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ আহমদের স্ত্রী হাসিনা বেগম, ভাবি ছেনুয়ারা বেগম, বোন রবি খাতুন, ভাতিজা মাইনুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম মানিকসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। তারা সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচতে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
তবে অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন জসিম উদ্দীন। তার দাবি, তিনি কারো জমি দখল করেন নি। হুমকি-ধমকিও দেন নি। সব মিথ্যা, অপপ্রচার।
এদিকে নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোহাম্মদ হাসান ফারুক। এতে জসিম উদ্দিন, তার ভাই গিয়াস উদ্দিন, শিয়া পাড়ার মোহাম্মদ কালুর ছেলে মুজিবুর রহমান, ৩নং ওয়ার্ডের বাক্কুম পাড়ার আবুল বশরের ছেলে আব্দুল্লাহ ও ৫নং ওয়ার্ডের পূর্ব পাড়ার আবদুস সোবহানের ছেলে জহিরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করেছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available