কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাইয়ে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা আলুবোঝাই ট্রাকের পিছনে এসে একটি মাইক্রোবাস ধাক্কা মারলে মাইক্রোবাসের ভিতরে থাকা দুইজন যাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ঘটনায় চালকসহ আরও ছয়জন যাত্রী আহত হয়।
৭ মার্চ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কের কালাই পৌরসভার নরওয়েস্ট হিমাগারের মূল ফটকের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার আধা ঘণ্টা পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে তাদের উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
এদিকে দাঁড়িয়ে থাকা আলুবোঝাই ট্রাক জব্দ করা হলেও ট্রাকের চালক ও তার সহকারী পালিয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কালাই থানার ওসি তদন্ত আনোয়ার হোসেন।
নিহত দুইজন হলেন, বগুড়ার শিবগঞ্জের রাঙ্গামাটি গ্রামের হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী ফাহিমা খাতুন (৪০) এবং একই গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে রোহান (০৮)। আর আহতরা হলেন- মাইক্রোবাসের চালক আব্দুর রশিদ, পাপিয়া, ফারিয়া, রাহুল ও নিশাদ। সবাই একই গ্রামর বাসিন্দা।
নিহত ফাহিমার স্বামী রাতে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তিনি বলেন, মাইক্রোবাসের চালক রশিদের এক আত্মীয়ের বাড়ি জয়পুরহাটের খঞ্জনপুরে। গত রাতে তাদের সাথে আমার স্ত্রী ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সেখানে দাওয়াত অনুষ্ঠান খেতে গিয়েছিল। আসার পথে এ দুঘর্টনা ঘটে। আমার ছেলে-মেয়েও গুরুতর আহত হয়। তারা এখন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সড়াইল মহল্লার বাসিন্দা আলু ব্যবসায়ী হাবিবুল হাসান বলেন, দুর্ঘটনার পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে অনেক বার কল করেছি কিন্তু তারা বলে আসতেছি। প্রায় আধা ঘণ্টা পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসে। তারা যদি ঘটনার সাথে সাথে আসতো তাহলে হয়তো এই দুজন মারা যেত না। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে মাইক্রোবাসের ভিতরে থাকা যাত্রীরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিল। তাদের গাফিলতির কারণেই তারা মারা গেছে।
তবে কালাই ফায়ার সার্ভিসের লিডার শাহ আলম বলেন, এমন অভিযোগ সত্য না। জানার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে মাইক্রোবাসের ভিতর থেকে সবাইকে উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছে।
ওসি তদন্ত আনোয়ার হোসেন জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাইক্রোবাসটি মহাসড়ক হয়ে জয়পুরহাট থেকে বগুড়ার দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে কালাই পৌরসভার নরওয়েস্ট হিমাগারের মূল ফটকের সামনে আলুবোঝাই দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে এসে ধাক্কা মারে। ফলে মাইক্রোবাসটির অর্ধেক অংশ ট্রাকের পিছন ঢুকে পড়ে। এতে করে চালকসহ সবাই মারাত্মক আহত হয়। সেখান থেকে তাদর উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফাহিমা খাতুনকপ মৃত ঘোষণা করেন। আর গুরুতর আহত সবাইকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে নেওয়ার পথে রোহান নামে আরও এক বালক মারা যায়।
এ ঘটনায় মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা আলুবোঝাই ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। আর চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available