বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার বেতাগীতে অভিনব কৌশলে হাতি দিয়ে চলছে চাঁদাবাজি। হাতির পিঠে বসে থাকা মাহুতের নির্দেশে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে।
সড়কে চলাচল করা পথচারী, যানবাহনের যাত্রী ও চালকদের কাছ থেকেও চাঁদা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষেরা।
বেতাগী পৌর শহরে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, এক দোকান থেকে আরেক দোকান, রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ঘুরছে এক বিরাট আকৃতির হাতি। পিঠে বসা হাতির মালিক। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে শুঁড় তুলে সালাম দিচ্ছে, তারপর শুঁড় এগিয়ে দিচ্ছে সোজা দোকানীর কাছে। যতক্ষণ পর্যন্ত শুঁড়ের মাথায় টাকা গুঁজে দিচ্ছে না কেউ, ততক্ষণ পর্যন্ত শুঁড় তুলছে না হাতি। এভাবে সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে শুরু করে দোকানের ধরণ অনুযায়ী ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে চাঁদা। এ সময় সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনে বাধা প্রধান করেও টাকা তুলতে দেখা যায় মাহুতকে।
পৌর বাজারের ব্যবসায়ী সুমন মিয়া বলেন, সন্ধ্যায় হঠাৎ দেখি দোকানের ভেতরে বিরাট আকৃতির এক হাতির শুঁড় ঢুকিয়ে দিয়ে টাকা চাচ্ছে মাহুত। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত হাতি নিয়ে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তখন বাধ্য হয়ে ২০ টাকা দিয়েছি।
ভুক্তভোগী মোটরসাইকেল আরোহী ইদ্রিস মিয়া বলেন, তিনি রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তখন হাতি শুঁড় তুলে আমার পথ আটকায়। কেবল আমাকেই নয়, একই কায়দায় অন্যসব যানবাহন আটকে দিচ্ছেন এবং ১০ থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেছে। টাকা না দিলে পথ ছাড়ছিলেন না মাহুত।
বেতাগী পৌর এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো: সাহাবুদ্দিন বলেন, মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাতি নিয়ে এসে চাঁদা আদায় করা হয়। প্রতিটি দোকান থেকে হাতি দিয়ে টাকা তোলা হয়। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত দোকান থেকে হাতি সরানো হয় না। অনেক সময় মহিলা ক্রেতারা হাতি দেখে ভয় পান। এতে ব্যবসায়ের খুব ক্ষতি হচ্ছে। তবুও বিষয়টি দেখার কেউ নেই।
হাতির পিঠে বসা যুবকের কাছে নাম পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নাম আরিফ। আমি বরগুনা থেকে বেতাগী উপজেলায় এসেছি। হাতির ভরণ পোষণের জন্য সবাই খুশি হয়ে কিছু টাকা দেয়। কেউ টাকা দিতে না চাইলে আমরা জোরাজুরি করি না।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আহমদ বলেন, হাতি বা বন্য প্রাণী ব্যবহার করে সড়কে বা বাজারে চাঁদাবাজি করা উচিত নয়। পেনাল কোডে এটি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available