সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছেন। এছাড়াও বিনামূল্যে দেওয়া সরকারি বই বছর শেষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফেরত নিয়ে কেজি সিসেবে বিক্রি করেন ওই শিক্ষিকা। নিয়মিত স্কুলেও আসেন না তিনি। তার এসব কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে বিরাজ করছে ক্ষোভ।
১১ মার্চ সোমবার সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকার ৯৫ নম্বর আদমজীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা বেগম। তিনি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অগোচরে পরিচ্ছন্ন কর্মীর বেতন দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১২০ টাকা করে আদায় করেন। সরকারি বেতনভুক্ত একজন দপ্তরি থাকার পরও আরেকজন পরিচ্ছন্ন কর্মী রেখে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করে নিজে আত্মসাত করছেন তিনি। বিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তিনি হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল অংকের টাকা।
এছাড়াও তিনি বছর শেষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পুরনো বই ফেরত নিয়ে মজিবুর নামে একজন ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীর কাছে কেজি হিসেবে বিক্রি করেন। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার কাছ থেকে পুরনো বই কেনার বিষয়টি এই প্রতিবেদকের কাছে ব্যবসায়ী মজিবুর স্বীকার করেছেন।
সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে শুভ, রত্না, রবিন, আশরিফা, অজান্তা ও আঁখিসহ অনেক শিক্ষার্থী তাদের কাছ থেকে ১২০ টাকা করে নেওয়ার কথা স্বীকার করে। বছর শেষে তাদের কাছ থেকে পুরনো বই ফেরত নেওয়া হয় বলেও জানায় এসব শিক্ষার্থী।
অভিভাবক ইলিয়াছ বলেন, প্রধান শিক্ষিকার অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তাই আপাতত আমার সন্তানকে স্কুলে পাঠাচ্ছি না। স্কুলটি সরকারি হলেও প্রত্যেক বছর জানুয়ারি মাসে ১২০ টাকা দিতে হয়। প্রধান শিক্ষিকা নিয়মের তোয়াক্কা করেন না।
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা বেগম টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও বই বিক্রির অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন। তবে ভবিষ্যতে আর টাকা নেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কজমিটির সভাপতি লিপি বেগম বলেন, প্রধান শিক্ষাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। তাই মিটিং ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম বলেন, সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় বা পুরাতন বই ফেরত নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। তদন্ত করে এসব অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available