স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মাঠে মাঠে এখন পেঁয়াজ বীজের সমারোহ। সাদা ফুলের মিষ্টি সুবাসে মৌমাছি আর পাখির মিতালীতে পল্লী প্রকৃতি যেন হাসছে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে হাজার কদম ফুল কিংবা হাজারো তারার মেলা। সাদা পেয়াজ ফুলের মধ্যে লুকিয়ে আছে কালো সোনা, যেন কৃষকদের স্বপ্ন দুলছে। এ পেঁয়াজ বীজ আবাদ করে এলাকার কৃষকদের হয়েছে ভাগ্য বদল। এলাকায় কালো সোনা খ্যাত এ বীজের আবাদ করে অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এ বছর পেঁয়াজ ও বীজের আকাশচুম্বী দাম কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে বাড়তি আগ্রহ। আর এ বীজের আবাদ করে কৃষকরা হয়ে উঠছেন স্বাবলম্বী এবং চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৪ শত ৪৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে। ভাল আবহাওয়া, সুষ্ঠ পরিচর্যা, কৃষি বিভাগের পরামর্শ, উন্নত জাতের বীজ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগের ফলে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী এবং পেঁয়াজ বীজের ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষকদের পেঁয়াজ চাষের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করেছে।
এলাকার বড় উদ্যোক্তা এবং তরুণরাও এ বীজ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। এলাকার বিস্তির্ণ মাঠ ভরে উঠেছে পেঁয়াজ ফুলে। সাদা ফুলের মাঝে এই কালো সোনাতেই কৃষকরা আগামীর স্বপ্ন বুনছেন। লাভ বেশি হওয়ার কারণে দিন দিন পেঁয়াজের বীজ চাষ বাড়ছে।
এলাকার কৃষকরা বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে এ বীজ আবাদে খরচ পড়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ৩ থেকে ৪ মন পর্যন্ত বীজ উৎপন্ন হয়। এ বছর এ বীজ বিক্রি হয়েছে মন প্রতি দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকা টাকা পর্যন্ত।
কৃষকরা আরও জানান, এ বছর বীজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ জন্য বেজায় খুশি এলাকার কৃষকরা। এ বছরও ভাল দামের আশা করছেন তারা।
পেঁয়াজ বীজ চাষী শাহজাহান জানান, তিনি এ বছর ১০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজ আবাদ করেছেন। গত বছর সফলতার পর এ বছরও চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
একই এলাকার কৃষক শান্ত শেখ, সোবাহান মাতুব্বর জানান, তারা গত বছর পেঁয়াজ বীজের ভাল উৎপাদন এবং দাম ভালো পাওয়ায় চলতি মৌসুমে চাষ বৃদ্ধি করেছেন। অপরদিকে এলাকার চৌকিঘাটা গ্রামের পেঁয়াজ বীজ চাষী শাহ আলম জানান তিনিও এ বছর পেঁয়াজ বীজ চাষে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জীবাংসু দাস বলেন, পেয়াজ বীজ কালো সোনা নামে খ্যাত। ভাঙ্গা উপজেলায় এ বছর ৪ শত ৪০ হেক্টর জমিতে পেয়াজ বীজ চাষাবাদ করা হয়েছে। কৃষকরা ফসলটি করে লাভবান হন বিধায় তারা এ বছর উৎপাদনও বাড়িয়েছে। সেই সাথে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সার্বক্ষনিক উৎপাদন কৌশল, রোগ, পোকামাকড় দমন এবং সেচ, সেচ ব্যবস্থাপনা অন্যান্য আন্তঃপরিচর্যা বিষয়ে আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকতার্রা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে আছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে উৎপাদন প্রত্যাশা মাফিক হবে।
এলাকার কৃষি সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা পেঁয়াজ বীজের উৎপাদনের মাধ্যমে এলাকার কৃষকরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available