স্টাফ রিপোর্টার, ভোলা: ভোলার দৌলতখান উপজেলায় দেশীয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আসিফ (১৮) নামের এক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। নিহত আসিফ উপজেলার চর খলিফা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. বাবুলের ছেলে।
আহতরা হলেন- আমজাদ, রাসেল, দুলাল, মিরাজ ও বাবু। এদের প্রত্যেকের বাড়িই চর খলিফা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। ১১ মার্চ সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই ইউনিয়নের কদমতলা এলাকার নুরু মিয়ার দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
১২ মার্চ মঙ্গলবার আসিফের বাবা মো. বাবুল বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি কবির (২৭), তার বাবা ছালেম (৬০) ও মা মোসা. ফিরোজা বেগমকে (৫০) আটক করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আহত রাসেল ও তার বন্ধু নিহাদকে নিয়ে সন্ধ্যার দিকে ঝালমুড়ি খেতে বাড়ির পাশের নুরে আলমের দোকানে যায়। সেখানে সুবর্ণা (১৬) নামে একটি মেয়ে দাঁড়ানো ছিল। তখন রাসেল তার বন্ধু নিহাদকে বলেন, ‘বন্ধু কালকে থেকে রোজা গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে দেখা করতে পারবি না। দেখা করতে তো টাকা খরচ হবে, সেই টাকা দিয়ে ঝালমুড়ি খাওয়া’। এই কথা শুনে সেখানে থাকা মেয়েটি ‘ছেলেগুলো অসভ্য বলে বাড়ি চলে যায়।’
বাড়ি গিয়ে সুবর্ণা তার ভাই ফাহাদকে বিষয়টি জানালে, ফাহাদ এসে সেখানে থাকা রাসেল ও নিহাদসহ পাঁচজনকে স্থানীয় জাইল্লা বাড়ির দরজায় পেয়ে তাড়া করলে, তারা দৌড়ে সুপারি বাগানে প্রবেশ করে। পরে সুপারি বাগানের ভেতরে গিয়ে ফাহাদ এসএস পাইপ দিয়ে রাসেলের পায়ে আঘাত করে।
পরবর্তীতে ফাহাদ তার ভাই কবির, বন্ধু শামিমসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে খবর দিলে তারা রামদা এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে আসে। একপর্যায়ে আসিফসহ সেখানে থাকা আরও চারজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আসিফকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে পাঠায়। এ ঘটনায় পর থেকেই ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি দৌলতখান উপজেলার পৌর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে ভাইকে রক্ষা করতে গেলে লোহার রডের আঘাতে খুন হয় মো. রাব্বি (২২) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী। এর রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও হত্যার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন আসাদুজ্জামান জানান, এঘটনায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলার পর তিনজকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ চলমান রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available